X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রাণ ও পরিবেশ রক্ষার অর্থ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিকল্পনা ট্রাম্পের

বিদেশ ডেস্ক
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৬:৪৯আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:০৯
image

ট্রাম্পের প্রথম বাজেট: ত্রাণ ও পরিবেশ রক্ষার অর্থে বাড়ছে প্রতিরক্ষা খাত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেসের সামনে তার প্রথম ভাষণ দিতে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবারের ওই ভাষণে বাজেটে সামরিক খাতে বড় অংকের বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হবে।  আর অতিরিক্ত খরচের অর্থ আসবে বৈদেশিক ত্রাণ ও পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন কার্যক্রমে বরাদ্দ কমানোর মাধ্যমে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘প্রেসিডেন্ট দেশের প্রতি এক আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।’ এর মধ্য দিয়ে ‘মার্কিন চেতনা’ উজ্জীবিত হবে বলেও তিনি দাবি করেন।

ট্রাম্পের বৃহৎ সামরিক অবকাঠামো গড়ে তোলা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্পাইসার বলেন, এ নিয়ে কংগ্রেসে দীর্ঘ-মেয়াদী আলোচনা করা হবে। ট্রাম্পকে তার বাজেট পাস করাতে কংগ্রেসের সমর্থন জরুরি। কংগ্রেসের উভয় কক্ষে রিপাবলিকানরা ক্ষমতাসীন হলেও তারা সবাই ট্রাম্পের কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেন না।

স্পাইসার আরও বলেন, ট্রাম্প এক ‘শক্তিশালী কর্মপরিকল্পনা’ গড়ে তুলে ‘দৃঢ় পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে, কর পুনর্গঠন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্যনীতি পুনর্গঠন, শিক্ষার অধিকার এবং সামরিক খাত পুনর্গঠন।

সোমবার ট্রাম্প স্থানীয় গভর্নর এবং স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পূর্ববর্তী স্বাস্থ্যনীতি ‘ওবামা কেয়ার’ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘আমাকে বলতেই হবে, বিষয়টি অত্যন্ত জটিল।’ তিনি আরও জানান, ‘এবারের বাজেট হবে জনরক্ষা ও জাতীয় সুরক্ষার বাজেট।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘মার্কিন সেনাবাহিনীকে নতুন করে গড়ে তুলতে এবারের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ঐতিহাসিকভাবে বড় অংকের বৃদ্ধি দেখা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সীমিত সামর্থ্য দিয়ে বেশি কিছু করার চেষ্টা করছি। সেই সঙ্গে সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যে অর্থ ব্যয় করি, তা দিয়ে আরও বেশি কিছু করা সম্ভব।’

সোমবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্যাঙ্ক, যুদ্ধজাহাজ এবং সমরাস্ত্র ব্যবস্থা উন্নয়নে ট্রাম্প প্রায় পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি ডলার প্রয়োজন বলে ট্রাম্প জানাবেন কংগ্রেসকে। আর এই অতিরিক্ত সামরিক খরচ নাগরিক ও পরিবেশ সুরক্ষায় দেওয়া বরাদ্দ থেকে কেটে নেওয়া হবে।

এর আগে রয়টার্সকে দেওয়া বৃহস্পতিবারের সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ করার আভাস দেন ট্রাম্প। তিনি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্ব তিনি দেখতে চান। তবে এই দাবির সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, ‘তবে পারমাণবিক শক্তির প্রশ্নে আমরা কোনও দেশের থেকেই পিছিয়ে থাকতে রাজি নই, এমনকি তা কোনো বন্ধুপ্রতিম দেশ হলেও।’ গত বছরের ডিসেম্বরে দেওয়া এক টুইটার পোস্টেও ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘গোটা বিশ্বে পারমাণবিক প্রকল্পের প্রশ্নে উপলব্ধি সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভার শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করা উচিত।‘

অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট-এর পরিচালক মিক মুলভানি জানিয়েছেন, পুরো বাজেটটি প্রস্তুত হতে চলতি বছরের মে পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। তবে সামরিক খাতে সামরিক ও পারমাণবিক কর্মসূচীকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী পররাষ্ট্র বিভাগের ত্রাণ সতায়তা এবং পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা ও অন্যান্য বেসামরিক কর্মসূচী থেকে বরাদ্দ কমানোর দাবি করা হয়।

অপর এক কর্মকর্তা জানান, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দফতরের খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশি সাহায্যের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার।

ট্রাম্পের এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেছে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক মার্কিন বাহিনীর কর্মকর্তা জর্জ কেসি, সাবেক সিআইএ পরিচালক ডেভিড পেট্রাউস প্রমুখ।

এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখতে কূটনীতি ও উন্নয়নের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সবকিছু সমাধান কেবল সামরিকশক্তির জোরে করতে পারি না।’

গত সপ্তাহেই ট্রাম্পের প্রধান নীতি-নির্ধারক স্টিভ ব্যানন বলেছেন, হোয়াইট হাউসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে রয়েছে সামরিকশক্তি বৃদ্ধি ও বিদেশি সাহায্য কমিয়ে আনা।

ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ট্রাম্পের ভাষণ বয়কটের কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে তারা কয়েকজন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন এক ইরাকি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক, এক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ডাক্তার এবং এক ফিলিস্তিনি শরণার্থীর মেয়েকে।

কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার জানান, বাজেটের ব্লুপিন্ট থেকেই বোঝা যায়, জনগণকে কর্মসংস্থানের আশা দেওয়া ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছেন। মধ্যশ্রেণির পরিবারগুলো এই সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষুবদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসিও ট্রাম্পের প্রতিরক্ষা বাজেট বিস্তৃত হওয়ার করার সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে এর ফলে মার্কিন কর্মসংস্থান বাড়বে না, বরং দেশ প্রতিনিয়ত দুর্বল হয়ে যাবে বলে ন্যান্সি দাবি করেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এসএ/বিএ/

সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চার কর্মকর্তা নিহত
মেক্সিকোতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ১৮
নিউ ইয়র্কে দুই বাংলাদেশি হত্যায় সন্দেহভাজন যুবক গ্রেফতার
সর্বশেষ খবর
বাকি না দেওয়ায় দোকানিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ
বাকি না দেওয়ায় দোকানিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চার কর্মকর্তা নিহত
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চার কর্মকর্তা নিহত
ঢাকা কর কমিশনারের কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ
ঢাকা কর কমিশনারের কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ
গরমে মরে যাচ্ছে শাকসবজি গাছ, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা চাষিদের
গরমে মরে যাচ্ছে শাকসবজি গাছ, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা চাষিদের
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে