X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

টিলারসনের সফর সেনাবাহিনী ও সু চির দূরত্ব বৃদ্ধি করেছে?

বিদেশ ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৩০আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৩৬

মিয়ানমারে প্রথম সফরে বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন দেশটির প্রভাবশালী দুই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের একজন দেশটির বেসামরিক সরকারের প্রধান রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং অপরজন সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লায়েং। সফরে টিলারসনকে খোলা মনের আখ্যায়িত করে প্রশংসা করেছেন সু চি। আর সেনাপ্রধান এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকের কাছে রাখাইন পরিস্থিতির ‘বাস্তব অবস্থা’ তুলে ধরেছেন।

টিলারসনের সফর সেনাবাহিনী ও সু চির দূরত্ব বৃদ্ধি করেছে?

সু চির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে টিলারসন বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সামগ্রিক নিষেধাজ্ঞা কাজে লাগবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

টিলারসনের এই সফরের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী নয় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে টিলারসনের বিরোধিতা দেশটির সরকার ও সামরিক নেতাদের জন্য সুখবর।

একই সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনার কথা বলে টিলারসন মূলত দেশটির সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা যদি বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পারি যে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কোনও ব্যক্তি জড়িত তাহলে আমাদের কাছে তা অগ্রহণযোগ্য। তখন নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ যথার্থ হবে।

টিলারসনের সফরের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সংবাদ সম্মেলনে তিনি রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করেননি। এছাড়া জাতিসংঘ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ আনলেও তিনি তা উল্লেখ করেননি।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী’র এক খবরে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্টের পর রাখাইনের সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক পদক্ষেপ সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই সীমাবদ্ধ রাখতে চায়।

নিপীড়নে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞার হুমকির পাশাপাশি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে বৈঠকে সেনাপ্রধান সতর্কভাবে জানিয়েছেন, রাখাইন রাজ্যে সরকারের নীতিকে অনুসরণ করবে সেনাবাহিনী।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেওয়া প্রসঙ্গে জেনারেল জানান, সরকার এই বিষয় দেখবে। সেনাবাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করবে।

ইরাবতীর খবরে আরও বলা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে আশঙ্কা রয়েছে সু চির সরকার ও দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যকার দূরত্ব ও আস্থাহীনতা আরও গভীর হতে পারে। ব্যাংকক পোস্টের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, কয়েকজন জেনারেল মনে করেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করছেন সু চি। সেনা কর্মকর্তাদের কাছে সু চি পশ্চিমাদের একজন এজেন্ট।

যদিও বাস্তবে সেনাবাহিনীর ওপর সু চির নিয়ন্ত্রণ একেবারে নেই। এরপরও অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সু চির বেসামরিক সরকারের সম্পর্কের অবনতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। যখন সেনা কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবে সু চির সম্মতি পাচ্ছেন।

রাখাইনে সেনা অভিযানে ব্যাপক সহিংসতা, হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা ও চাপের মুখে রয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।  ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার পর সামরিক অভিযান জোরদার করে মিয়ানমার। এ অভিযানের পর ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ এনেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, রোহিঙ্গারা মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হচ্ছে বলে দাবি করেছে। মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমন্ত্রণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব এনেছে।

 

/এএ/
সম্পর্কিত
লাদাখ সীমান্তে বিরোধচীনের সঙ্গে আলোচনায় আশাবাদী রাজনাথ সিং
মিসরে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনা, গাজায় বোমা ফেলছে ইসরায়েল
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
সর্বশেষ খবর
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
আমান উল্লাহ আমানকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলেন আপিল বিভাগ
আমান উল্লাহ আমানকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলেন আপিল বিভাগ
বুধবার থেকে ঢাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা সশরীরে
বুধবার থেকে ঢাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা সশরীরে
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলে ১ লাখ ডলার পাবেন বাবররা!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলে ১ লাখ ডলার পাবেন বাবররা!
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?