তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দলটির নেতৃত্বের মধ্যে বিভেদের খবর আসতে শুরু করে। এর মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার আরও কয়েকজন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। এদিন ঘোষিত সদস্যদের বেশিরভাগই উপমন্ত্রী। তবে তালেবান প্রশাসনে বৈচিত্র্য আনতে এদিনের ঘোষণা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।
এ দফায় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন এক সময় তালেবানবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পাঞ্জশির এবং বাঘলানের প্রতিনিধিরাও। মিলিশিয়া গোষ্ঠী ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফ্রন্টের ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় পঞ্জশিরকে। রাজধানী কাবুলসহ পুরো দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা দখলের পরও এই উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে তালেবানকে। গত কয়েক মাসে বাঘলানেরও কিছু জেলায় প্রতিরোধের চিত্র দেখা গেছে।
তালেবান সতর্ক ছিল যে, সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় তাজিক ও উজবেক অধ্যুষিত পঞ্জশির, বাঘলান এবং সার-ই পোল এলাকার যেন প্রতিনিধিত্ব থাকে। সরকারে এরইমধ্যে তাজিক, উজবেক ও তুর্কমেনদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সমর্থ হয়েছে দলটি। তবে তাদের সরকারে এখনও শিয়া, হাজারা বা অন্য কোনও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নেই।
তালেবান প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার বসবাস কান্দাহারে। ক্ষমতার মূল কেন্দ্র হিসেবে দেখা হয় শহরটির একটি গোপন শুরা বা উপদেষ্টা শিবিরকে। এই সার্কেলটিই এখন আফগানিস্তানের প্রকৃত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কয়েক বছর ধরে তালেবানের নিউজ করেছেন এমন একজন সংবাদকর্মী বলেন, কাবুলের আনুষ্ঠানিক সরকারের তেমন ক্ষমতা নেই। বেশ কিছু তালেবান নেতা নতুন প্রশাসনে তাদের অবস্থান নিয়ে স্পষ্টতই বিরক্ত ছিলেন। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সূত্রগুলোর আশঙ্কা, তালেবানের অভ্যন্তরীণ নানা বিরোধ রাজধানী কাবুলসহ অন্যান্য প্রদেশে তাদেরকে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ওই সংবাদকর্মী বলেন, ‘রাজনৈতিক আসনের জন্য লড়াই এক জিনিস। কিন্তু যোদ্ধারা যদি তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধের ভিত্তিতে যুদ্ধ শুরু করে, তখন কোনও জায়গাই আর নিরাপদ থাকবে না।’ সূত্র: আল জাজিরা।