X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

৪৬তম কলকাতা বইমেলায় পালিত হলো বাংলাদেশ দিবস

রক্তিম দাশ, কলকাতা
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:১৪আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:১৪

কলকাতার ধাঁচে বাংলাদেশে হোক আন্তর্জাতিক বইমেলা এমনই আবেদন করেন কলকাতা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে। অপরদিকে, কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নের জায়গা বাড়ানো হোক আবেদন করেছেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি  মাজহারুল ইসলাম।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে কলকাতা বইমেলা ভিড়ে ঠাসা। প্রতিবছরের মত কলকাতা বইমেলায় এদিন পালিত হলো বাংলাদেশ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন দুই বাংলার বিশিষ্টজনেরা।

অনুষ্ঠানে মাজহারুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। সেই জায়গাটি আমাদের শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির। দুই দেশের মধ্যে যে সেতু তৈরি হয়েছে তার মূল ভিত্তিই রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ। সেক্ষেত্রে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে এই সম্পর্ককে আটকানো যাবে না।

তিনি বলেন, এই বইমেলায় অন্য দেশের প্যাভিলিয়ান আছে কিন্তু বাংলা বইয়ের পাঠকের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু শনিবার বিকালে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ানের ভিড়ই বলে দিচ্ছে যে বাংলাদেশি বইয়ের পাঠকের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু স্থান সংকুলানের অভাবে এ বছর ৪৩টি প্রকাশনী সংস্থা এসেছে। এতটাই ভিড় হয়েছে যে স্টলগুলোতে দাঁড়িয়ে বই নেড়েচেড়ে দেখার সুযোগ নেই। ফলে কলকাতা বইমেলা কর্তৃপক্ষ যাতে বিবেচনা করেন যে পাঠকদের সুবিধার্থে আগামী বছর পাঁচ হাজার বর্গ ফুট জায়গা দেওয়া হয়।

এসময় পাশে থাকা বইমেলার আয়োজক সুধাংশু শেখার দে'কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি মনে করি গিল্ড যেভাবে বরাবরের পাশে দাঁড়িয়েছে আগামী বছরও ঠিক এভাবে পাশে দাঁড়াবে। ওনারা যদি উদ্যোগ নেয় তবে আমাদের এই দাবি পূরণ করা সম্ভব।

কলকাতা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে বলেন, গত বছর কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ থিমকান্ট্রি ছিল। সে বছর অন্যান্য প্রকাশককে কম জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ সবসময় গুরুত্ব পায়। আমার মেলায় একটা নির্দিষ্ট দিনে বাংলাদেশ দিবস পালন করি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। আমরা জানি বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নে প্রতিবছর ভিড় উপচে পড়ে। তাছাড়া প্রতিবছর বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নে জন্য যে জায়গা বরাদ্দ থাকে প্যাভেলিয়ন বানানোর জন্য, তৈরির সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবছরও বাড়ানো আছে। কিন্তু বাংলাদেশের সব প্রকাশককে এক জায়গায় আনা কখনই সম্ভব নয়। ফলে এর থেকে বেশি বাড়ানো আর সম্ভব নয়। এর কারণ কলকাতার বইমেলা প্রাঙ্গণ সীমিত জায়গা। তবে আমি মানছি বাংলাদেশের চাহিদা বেশি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন হয় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে। 

সভাপতি আরও বলন, এবছর আমরা ১২৪ জন প্রকাশক জায়গা দিতে পারেনি। তাদের কথা দিয়েছি আগামী বছর ৫০ বর্গফুট জায়গা হলেও দেবো। ফলে বুঝতেই পারছেন। কলকাতা বইমেলা আপন গতিতে চলছে। এরজন্য কলকাতার পাঠক প্রকাশকদের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও ধন্যবাদ জানাই।

কলকাতা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথমবার কলকাতা বইমেলায় যুক্ত হয় বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশ ক্রমশ তার স্থান বাড়াতে বাড়াতে বিশাল একটা জায়গা করে নিলো। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ থিম কান্ট্রি হল। সেই থেকে বাংলাদেশের বইয়ের প্রতি এপার বাংলার পাঠকদের চাহিদা তৈরি হলো। বাংলাদেশের বইয়ের পাঠক তৈরি হলো।

আন্তর্জাতিক কলকাতা বই মেলা সারা পৃথিবীময় ছড়িয়ে দেওয়ার অংশ হিসাবে ঢাকাতে করতে চাই। এবং ২০২৩ সালে এই মেলা করতে চাই।

তার অভিমত, ২০২৫ সালে স্পেনের মাদ্রিদে বইমেলা 'ভারত ফোকাল থিম কান্ট্রি নির্বাচিত হয়েছে। সেখানেই আলাদা করে কলকাতাকে প্রাধান্য দেওয়া হোক। প্রাথমিকভাবে তাতে সম্মতিও জানানো হয়েছে। তবে তার আগে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে করতে চাই। সেক্ষেত্রে মাদ্রিদে যাওয়ার আগেই ২০২৩ সালে এই মেলা করতে চাই। এ নিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকেও তাদের আবেদন সংশ্লিষ্ট মহলে পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানান ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়।

বিশিষ্ট কবি বীথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনও দেশ নেই যা ভাষার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ডাক দিয়েছিলেন যে এভাবে উর্দু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, ভাবতে অবাক লাগে সেই ভাষা আমাদের বাংলা ভাষা, আমার মাতৃভাষা। এই বাংলা ভাষায় দু'বাংলা ভাব প্রকাশ করি, রাগ প্রকাশ করি সেসব লেখার মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে। তবে হ্যাঁ দুই বাংলা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। অবশ্য ঘেরা নিয়ে আমার কোনও দ্বিমত নেই। কেউ যদি বলে পাখির তো সীমানা হয় না। কিন্তু পাখির মনে কোনও সন্ত্রাস বাস করে না।  যা মানুষের মধ্যে আছে, আমাদের মধ্যে আছে। তাই আমাদের ভিসা, পাসপোর্ট,  কাঁটাতারের দরকার হয়। তব আমি মনে করি বাংলাদেশ আমাদের গর্বের দেশ। বাংলাদেশের লোক বলতে আমার নিজেকে গর্ববোধ হয়। আমরা যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি বাংলাদেশ তাদের সবার দেশ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।

/এমএস/
সম্পর্কিত
জলপাইগুড়িতে বিজেপির ইস্যু বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া করিডর
ইডি হেফাজতে আরও ৪ দিন কেজরিওয়াল
সরকার ক্ষমতায় থাকতে ভোটের ওপর নির্ভর করে না: সাকি
সর্বশেষ খবর
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!