কোনও অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে গাজায় সম্ভাব্য একটি যুদ্ধবিরতির আলোচনা। পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই অঞ্চলটিতে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কায়রোতে হামাস এবং মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। তবে রমজান শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগেই মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এই আলোচনা ভেঙে যায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
রয়টার্সকে হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেছেন, দুদিনের আলোচনার সময় মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব পেশ করেছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। তারা এখন এই আলোচনায় অংশ না নেওয়া ইসরায়েলিদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা করছে।
নাইম বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান না। তবে বল এখন আমেরিকার কোর্টে।’ একটি চুক্তির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দিতে পারে দেশটি।
এদিকে, কায়রোতে অনুষ্ঠিত আলোচনার বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।
এর আগে একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছিল, ইসরায়েল এই আলোচনায় অংশ নেবে না। কেননা, হামাসের কাছে আটক থাকা সব জীবিত জিম্মির নামের তালিকা প্রকাশ করার অনুরোধ করা হলে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। হামাস বলেছিল, তাদের দেওয়া সব দাবি মেনে নিলেই জিম্মিদের তালিকা দেওয়া হবে।
নাইম বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতি ছাড়া এটি অসম্ভব। কেননা, পৃথক গোষ্ঠীর হাতে আটক জিম্মিরা যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
কায়রোর এই আলোচনাকে গাজায় প্রথমবারের মতো বর্ধিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। এই প্রস্তাবের আওতায়, একটি ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত রাখা হয়। এছাড়া, মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ রুখতে রমজান শুরুর আগেই গাজায় সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা আগামী সপ্তাহের শুরুতেই শুরু হওয়ার কথা ছিল।
সোমবার মিসরীয় নিরাপত্তা সূত্র বলেছিল, ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছাড়াই আলোচনা চালিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন তারা। সেটি শুরু করতে ইসরায়েলের অনুমতির দরকার। আর তাই তখনও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিল মিসরীয় প্রতিনিধিরা।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং এই আলোচনার পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র বলছিল, একটি চুক্তির কাছাকাছি ছিল তারা। ইতোমধ্যে একটি চুক্তিতে কার্যকরভাবে ইসরায়েলের সম্মতির কথাও জানিয়েছিল দেশটি। সেটি তখন শুধু হামাসের সম্মতির অপেক্ষায় ছিল।