ভারতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সব ধরণের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করেছে পাকিস্তান। জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি ও পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত শুক্রবার অনুমোদন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা ফিরদাউস আশিক খান জানিয়েছেন, পাকিস্তান-আফগানিস্তান ট্রানজিট চুক্তির আওতায় ভারতের পণ্য আমদানিও বাতিল করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের মাত্রা ইসরায়েলের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে ইসলামাবাদ। জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে কোনও ধরণের বাণিজ্য সম্পর্কই নেই পাকিস্তানের।
গত সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া একটি বিলও অনুমোদন করেছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
বুধবার (৭ আগস্ট) ইমরান খানের সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করাসহ ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। একইসঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও স্থগিত করা হয়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দুটি আলাদা নোটিশ জারি করে পাকিস্তান। এর একটিতে ভারতে সব ধরণের পণ্য রফতানি বন্ধের আদেশ দেওয়া হয় আর অপরটিতে ভারতে উৎপাদিত সব ধরণের পণ্য বা ভারত হয়ে আসা সব পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগে শুধুমাত্র ইসরায়েলের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ রেখেছিল পাকিস্তান।
ভারত থেকে প্রায় একশো পণ্য আমদানি করে থাকে পাকিস্তান। অপরদিকে পাকিস্তান থেকে ভারতে রফতানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে, তাজা ফলমূল, খেজুর, ডুমুর, আনারস, অ্যাভোকাডো, পেয়ারা, আম, সিমেন্ট, তিল ও জিমসাম।