দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কাশ্মিরি শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক ও দুপুরের খাবার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। উপত্যকার বাইরে অবস্থানরত কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঈদ উৎসব আয়োজন করতে প্রত্যেক লিয়াঁজো কর্মকর্তাকে এক লাখ রুপি বরাদ্দ দিয়েছেন সেখানকার গভর্নর সত্য পাল মালিক। দিল্লিতে পাঠানো অর্থে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম আউটলুক ইন্ডিয়া।
গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন সকাল থেকে জম্মু-কাশ্মিরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। দোকান, স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনও গণপরিবহন নেই। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা জনশুণ্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র সেনারা।
এমন পরিস্থিতিতে উপত্যকার বাইরে অবস্থানরত যেসব কাশ্মিরি শিক্ষার্থী ঈদ উপলক্ষে ফিরতে পারছে না তাদের সহায়তার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে লিয়াঁজো কর্মকর্তা নিয়োগ করেন কাশ্মিরের গভর্নর সত্য পাল মালিক। কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঈদ উৎসব আয়োজনের জন্য প্রত্যেক লিয়াঁজো কর্মকর্তাকে তিনি এক লাখ রুপি বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানান গত শুক্রবার (৯ আগস্ট)।
মঙ্গলবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আগামী ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করেছিলেন জম্মু ও কাশ্মিরের তথ্য বিষয়ক উপপরিচালক। তবে ওই অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসে লিয়াঁজো কর্মকর্তার সঙ্গে প্রস্তাবিত খাবার অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা জানিয়েছে। ‘ন্যায় বিচারের স্বার্থে জানাতে চাই যে আমরা শুধু প্রস্তাবিত এই খাবার অনুষ্ঠানই বর্জন করছি না বরং রাষ্ট্রীয় অর্থে আয়োজিত ভবিষ্যতে যেকোনও অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকেও বিরত থাকবো।’
সংবাদমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ধরণের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে আমরা আমাদের জনগণের বৈধ অধিকারের ঘোরতর বিরোধিতা ও বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে করি’।