ভারতের কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন কাজী মোহাম্মদ মঈনুল আলম (৩৫) এবং ফারহানা ইসলাম তানিয়া (২৮)। শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে দুইটার দিকে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণিতে গাড়িচাপায় নিহত হন তারা। অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান জিয়াদ নামে তাদের সঙ্গে থাকা আরেকজন।
চোখের সমস্যা নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন মঈনুল। সঙ্গে ছিলেন বন্ধু ফারহানা ইসলাম তানিয়া এবং স্বজন জিয়াদ। মাঝেমধ্যেই কলকাতায় যেতেনে মইনুল। কিন্তু এবার আর দেশে ফেরা হলো না। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো দুই বন্ধু মঈনুল ও তানিয়ার।
ভাইয়ের এমনভাবে মৃত্যু হয়েছে এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না মইনুলের ভাই কাজী মোহাম্মদ সাইফুল আলম। শনিবার বিকালে যখন তাকে ফোন করা হয়, তিনি তখন যশোরের বিমান ধরছেন। কান্না জড়ানো গলায় বললেন, ‘‘ভাবতেই পারছি না এমনটা হয়েছে। পরশু রাতেই কথা হয়েছিল। আমি ঝিনাইদহে যাচ্ছি বাবা-মায়ের কাছে। ওরা তো এখনও কিছু জানেই না।’’
সাইফুল জানান, তানিয়া তার ভাইয়ের বন্ধু ছিলেন। জিয়াদ এবং তানিয়াকে নিয়ে মইনুল গত ১৪ তারিখ ভারতে যান। উঠেছিলেন মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে।
মইনুল ঝিনাইদহের বাসিন্দা। তবে গ্রামীণফোনে কাজ করার সূত্রে ঢাকায় থাকতেন। ম্যানেজার পদে কর্মরত মইনুলের স্ত্রী এবং চার বছরের ছেলেও তার সঙ্গে থাকতো। বন্ধু তানিয়া ঢাকায় সিটি ব্যাংকের কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন সাইফুল।
১৫ অগস্ট রাতে মইনুলের সঙ্গে শেষ কথা হয় সাইফুলের। তিনি বলেন, “কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চোখ দেখাতে গিয়েছিলেন এর আগে। এ বারের যাওয়া ছিল রুটিন চেকআপের জন্য। তানিয়া-জিয়াদও ওর সঙ্গে গিয়েছিল।’’
পুলিশ জানিয়েছে, রাতে রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়ার পর তিন জন ফুটপাত ধরে হাঁটছিলেন। ফিরছিলেন মির্জা গালিব স্ট্রিটের হোটেলে। হঠাৎ দ্রুত গতিতে আসা একটি গাড়ি ধাক্কা মারে তাদের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মঈনুল ও তানিয়ার। বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে আনন্দবাজার জানিয়েছে, দাফতরিক যাবতীয় বিষয়ের সমাধান হয়েছে। রবিবার সকালে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হবে মঈনুল-তানিয়ার মরদেহ। সাইফুল জানান, ‘‘কাল সকালে ভাইয়ের মরদেহ বেনাপোল থেকে নিয়ে সোজা ঝিনাইদহে আনা হবে। সেখানেই জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠিত হবে।’’ সূত্র: আনন্দবাজার, এনডিটিভি।