পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভের জেরে হংকং-এর আইনের শাসন ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার অঞ্চলটির বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘাতের পর এক বিবৃতিতে এই সতর্কতা দেওয়া হয়। এতে সহিংসতার জন্য বিক্ষোভকারীদের দায়ী করা হয়। তবে তা সত্ত্বেও এদিন সেখানকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিক্ষোভ হয়েছে হংকং-এর কেন্দ্রস্থলে।
এক সময়ের ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং এখন চীনের অংশ। ‘এক দেশ, দুই নীতি’র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং। অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা,ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে একপর্যায়ে ওই বিল প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৃহত্তর গণতন্ত্র ও বিক্ষোভের সময় পুলিশি তৎপরতার তদন্তের দাবি। সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে আহত এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীদের চীনবিরোধী বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। গত সোমবারও বিক্ষোভে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার জন্য বিক্ষোভকারীদের দায়ী করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার হংকং-এর একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ব্যারিকেড বসালে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরা ইট ছুড়ে জবাব দেয়। দিনভর সেখানে সহিংসতা চলে। এদিকে সিটি ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থী ও দাঙ্গা পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান সন্ধ্যার পরও অব্যাহত থাকে। এদিন অঞ্চলটির কেন্দ্রস্থলে লাঞ্চের সময় রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করে প্রায় এক হাজার গণতন্ত্রপন্থী। অফিসিয়াল পোশাক পরিহিত এসব বিক্ষোভকারী চীনবিরোধী স্লোগান দেয়।
মঙ্গলবার বিকেলে হংকং পুলিশের মুখপাত্র কং উইং-চিয়াং বলেন, বিক্ষোভকারীদের হাতে নিরীহ মানুষ আক্রান্ত হওয়ার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। তিনি বলেন, পার পেয়ে যাওয়ার আশায় মুখোশ পরিহিত দাঙ্গাকারীরা নির্বিচারে সহিংসতা বাড়িয়ে চলায় হংকং-এর আইনের শাসন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।