X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

উইঘুর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে বিল পাস

বিদেশ ডেস্ক
০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:১২আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:৩০

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় একটি বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ। বিলটিতে এ ইস্যুতে ঊর্ধ্বতন চীনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার প্রশাসন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির পরিকল্পনা করছে। কিন্তু এ বিল সে পরিকল্পনায় আঘাতের শামিল। এর ফলে দুই দেশের সম্ভাব্য একটি চুক্তি নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হলো। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। উইঘুর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে বিল পাস
যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ৪০৭-১ ভোটে বিলটি পাস হয়েছে। তবে এতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে।

বিলটি উত্থাপনকারীরা চাইছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেন চীনে মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের নিন্দা জানান। একইসঙ্গে তিনি যেন জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলিম বন্দিশিবির বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলো বন্ধে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানান। বিশেষ করে চীনের ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব শেন কোয়ানগুয়োর ওপর যেন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে অবশ্য প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া এ বিলের সমালোচনা করা হয়েছে। চীনের দাবি, বিদ্বেষমূলকভাবে এ বিল তোলা হয়েছে। একইসঙ্গে উইঘুর ইস্যুকে আইনি কাঠামো না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। চীন তার স্বার্থরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়েছে বেইজিং।

চীনের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, বিলটি আইনে পরিণত হলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিংয়ের প্রথম ধাপের বাণিজ্য চুক্তি ঝুঁকির মুখে পড়বে। তবে প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের মুখপাত্র দিলশাত রক্ষিত। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীনের অব্যাহত চরম নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই বিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তার সংগঠন ট্রাম্পের স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। উইঘুর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে বিল পাস

এমন সময়ে প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস হলো যার কিছুদিন আগেই চীনের বন্দিশিবির বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলোতে লাখ লাখ মুসলিমের মগজধোলাই তথা বিশ্বাস বদলে দেওয়ার নথি ফাঁস হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে এ ধরনের গোপন বন্দিশিবিরের কথা বেইজিং বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। চীনের দাবি, এগুলো আসলে কারিগরি প্রশিক্ষণ শিবির এবং মুসলিমরা স্বেচ্ছায় এখানে প্রশিক্ষণ নিতে গেছে। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিআইজে যেসব ফাঁস হওয়া গোপন দলিলপত্র হাতে পেয়েছে, তাতে উঠে এসেছে কীভাবে এই উইঘুর মুসলিমদের বন্দি করে মগজধোলাই এবং শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

ধারণা করা হয়, চীনা বন্দিশিবিরগুলোতে ১০ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলিমকে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। তবে উইঘুর টাইমস বলছে, এসব শিবিরে প্রকৃত বন্দির সংখ্যা ৩০ লাখ। ইয়ো জান নামের একজন সাবেক বন্দি জানিয়েছেন এ বন্দিশিবিরে তার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার ইতিহাস। তিনি জানান, তাকে রাতের বেলায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর এক বছর আটকে রাখা হয় কারিগরি প্রশিক্ষণ শিবির নামের কুখ্যাত বন্দিশিবিরে। তার ভাষায়, ‘ওরা আমাকে নগ্ন করে পায়ে শেকল পরিয়ে দিলো। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। ওরা আমাদের মানুষ হিসেবে গণ্য করতো না। সেখান থেকে জীবিত বেরিয়ে আসতে পারবো বলে ভাবিনি কখনো।’ ইয়ো জান তার যে অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন, সেটাই বন্দিশিবিরে আটক আরও লাখ লাখ উইঘুর মুসলিমের কাহিনি।

বিশ্ব উইঘুর কংগ্রেসের আইনি উপদেষ্টা বেন এমারসন বলেন, চীন এখন বিশ্বের এক বড় পরাশক্তি। কিন্তু তারা নিজের জনগণকে আটকে রাখছে, যতক্ষণ না এসব মানুষ তাদের বিশ্বাস, ভাষা এবং নিজস্ব জীবনযাত্রা পুরোপুরি বদলে ফেলছে। তার ভাষায়, ‘এটাকে গণহারে মগজধোলাই ছাড়া অন্য কিছু ভাবা আসলেই কঠিন। একটি পুরো জাতিগোষ্ঠীকে টার্গেট করে এই কাজ চালানো হচ্ছে।’

/এমপি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
মিয়ানমারে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত শহরে কোণঠাসা জান্তা
ঢাকায় চীনের ভিসা সেন্টার, প্রয়োজন হবে না দূতাবাসে যাওয়ার
আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায় চীন ও ইন্দোনেশিয়া
সর্বশেষ খবর
ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট কাল
ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট কাল
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ইইউ দেশগুলোকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র পাঠাতে হবে: বোরেল
ইইউ দেশগুলোকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র পাঠাতে হবে: বোরেল
কানের সমান্তরাল তিন বিভাগে কোন কোন দেশের ছবি
কান উৎসব ২০২৪কানের সমান্তরাল তিন বিভাগে কোন কোন দেশের ছবি
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট