X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিপোলি বিমানবন্দরের কাছে হাফতার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান লিবিয়ার

বিদেশ ডেস্ক
২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:২৫আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:২৮

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির দক্ষিণে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা খলিফা হাফতারের বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকারি বাহিনী। শনিবার ত্রিপোলি বিমানবন্দরের কাছেই এ অভিযান শুরু হয়। এর নাম দেওয়া হয়েছে ভলকানো অব রেজ অপারেশন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ত্রিপোলি বিমানবন্দরের কাছে হাফতার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান লিবিয়ার
ভলকানো অব রেজ অপারেশন-এর মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, হাফতারের সমর্থনে লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়া। তবে লিবীয় বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। তারা হাফতার বাহিনীর কাছ থেকে কয়েকটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। একটি সামরিক যান ও কয়েকটি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা হয়েছে।

সরকারি বাহিনীর একজন সদস্য আশরাফ আল মাহজৌবি। তিনি বলেন, আজ আমরা অগ্রসর হয়েছি। শত্রুরা (হাফতার বাহিনী) পরাজিত হয়েছে। তারা পালিয়ে গেছে।

লিবিয়া সরকার এমন সময়ে হাফতার বাহিনীর বিরুদ্ধে এ অভিযান শুরু করলো যার কিছুদিন আগেই তুরস্কের কাছে সামরিক সহায়তা চেয়েছে দেশটি। ওই আহ্বানের প্রেক্ষিতেই ইতোমধ্যেই দেশটিতে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান।

সম্প্রতি আঙ্কারায় নিজ দল ক্ষমতাসীন একে পার্টি-র এক অনুষ্ঠানে এ নিয়ে কথা বলেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, লিবিয়ার পক্ষ থেকে দেশটিতে সেনা মোতায়েনের জন্য তুরস্কের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। আঙ্কারা সে অনুরোধ গ্রহণ করবে। আগামী জানুয়ারিতে তুরস্কের পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হবে। এ সময় সেখানে লিবিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশটিতে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে বিল তোলা হবে। অভ্যুত্থানকামী জেনারেলের (বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতার) বিরুদ্ধে আমরা লিবিয়া সরকারকে সব ধরনের সমর্থন দেবো। বিভিন্ন ইউরোপীয় ও আরব দেশ এই জেনারেলকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।

জীবনযাপনের মানের দিকে থেকে তেলসমৃদ্ধ লিবিয়া একসময় আফ্রিকার শীর্ষে ছিল। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ছিল পুরোপুরি রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা ওই ঐশ্বর্য নিশ্চিত করেছিল, সেটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ২০১১ সালে যখন পশ্চিমা সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন হয়। তারপর থেকে লিবিয়ায় চলছে সীমাহীন সংঘাত। গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মনোনীত সরকার রয়েছে। ওই কর্তৃপক্ষকে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার বা জিএনএ নামে অভিহিত করা হয়। তবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে রয়ে গেছে। পশ্চিমাঞ্চলে জিএনএ-র কর্তৃত্ব থাকলেও পূর্ব ও দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চল হাফতার বাহিনী এলএনএ-এর দখলে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এ বাহিনী লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে লিবিয়ায় দুটি সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে একটি সরকারকে সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশ। আরেকটি ফিল্ড মার্শাল হাফতারের নেতৃত্বাধীন। ত্রিপোলির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে জাতিসংঘ। তুরস্ক, ইতালি ও যুক্তরাজ্যও এ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। আর হাফতার বাহিনীর সমর্থনে রয়েছে রাশিয়া, ফ্রান্স, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে (জিএনএ) সমর্থন করে এবং শান্তি আলোচনার আহ্বান জানায়। কিন্তু ২০১৯ সালের এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খলিফা হাফতারকে ফোন দিয়ে লিবিয়ার ব্যাপারে ‘যৌথ স্বপ্নের’ কথা বলেন।

কে এই খলিফা হাফতার

লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা খলিফা হাফতার পরে হয়ে ওঠেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র মদতপুষ্ট বিদ্রোহী। গত চার দশকে লিবিয়ার রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে পরিণত হন তিনি। এ সময়ের মধ্য তার অনেক উত্থান-পতন রয়েছে। কখনও ছিলেন লিবিয়ার ক্ষমতা কেন্দ্রের কাছাকাছি খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কখনও তাকে ক্ষমতা থেকে দূরে সরে যেতে হয়েছে। পরে আবার তার প্রত্যাবর্তন ঘটেছে ক্ষমতার কেন্দ্রে।

খালিফা হাফতারের অধীনে থাকা বাহিনী লিবিয়ার প্রধান তেল টার্মিনালগুলোর দখল নিয়েছে। তার নিয়ন্ত্রণাধীন পূর্বাঞ্চলীয় শহর টবরুকের পার্লামেন্টের হাতে (এই পার্লামেন্টকে স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) দেশটির গুরুত্বপূর্ণ তেল সম্পদের নিয়ন্ত্রণ। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি।

/এমপি/
সম্পর্কিত
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
আটলান্টিক মহাসাগরে পাওয়া ৯ মরদেহের পরিচয় নিয়ে যা বললো ব্রাজিল
ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে নিহত ৯, উদ্ধার ২২
সর্বশেষ খবর
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মোহনায় শতাধিক পাইলট তিমি আটক
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মোহনায় শতাধিক পাইলট তিমি আটক
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি