তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, জেনারেল খলিফা হাফতার ও তার বাহিনী যদি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রাখে তাহলে তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া থেকে বিরত হবে না আঙ্কারা। মঙ্গলবার রাশিয়া ও তুরস্কের উদ্যোগে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে হাফতার রাজি না হওয়ার পর এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গত নয় মাস ধরে লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার ও হাফতার বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার। কিন্তু মঙ্গলবার চুক্তি স্বাক্ষর না করেই মস্কো ছাড়েন হাফতার।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, হাফতার চুক্তি স্বাক্ষর না করলেও তা নিয়ে ইতিবাচক এবং বিবেচনার জন্য দুই দিন সময় চাওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু এরদোয়ান বলছেন, হাফতার পালিয়ে গেছেন।
জানুয়ারির শুরুতে তুরস্কের পার্লামেন্টে হাফতারকে মোকাবিলায় ত্রিপোলিতে সেনা মোতায়েনের পক্ষে একটি সিদ্ধান্ত পাস করেছে। হাফতার বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, জর্ডান ও রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধারা।
এক ভাষণে এরদোয়ান বলেছেন, লিবিয়ার বৈধ সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে যদি হাফতারের সহিংস হামলা অব্যাহত থাকে তাহলে তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া থেকে বিরত হবে না তুরস্ক। লিবিয়ায় স্বজনদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, লিবিয়ার সঙ্গে তুরস্কের ঐতিহাসিক ও সামাজিক সম্পর্ক রয়েছে। তুরস্ক হস্তক্ষেপ না করলে হাফতার পুরো দেশটি দখল করে ফেলতেন। রবিবার বার্লিনে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের আয়োজনে বৈঠকে অংশগ্রহণ করবে আঙ্কারা।
এরদোয়ান আরও বলেন, এখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ এবং জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকা ইউনিয়ন ও আরব লিগ।
বিদ্রোহী সেনা কমান্ডারের চুক্তিতে স্বাক্ষর না করার বিষয়ে এরদোয়ান বলেন, অভ্যুত্থান চেষ্টাকারী হাফতার অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি। প্রথমে তিনি হ্যাঁ বলেছিলেন। পরে তিনি মস্কো থেকে চলে যান। তিনি মস্কো থেকে পালিয়েছেন। এরপরও মস্কোর আলোচনাকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখি। এতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাদের সত্যিকার রূপ স্পষ্ট হয়েছে।
হাফতারের কার্যালয় ও তাদের বাহিনী এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিটি প্রত্যাখ্যানের কথা নিশ্চিত করেনি। তবে তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তিনি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন না। হাফতারের সঙ্গে লিবীয় সরকারের এই আলোচনা সরাসরি হচ্ছে না। তারা তুর্কি ও রুশ মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।