X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইরাকে সোলাইমানির দায়িত্বে নাসরাল্লাহ?

বিদেশ ডেস্ক
১৬ জানুয়ারি ২০২০, ২০:৩৫আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ২০:৩৯

ইরাকে ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়াদের ঐক্যবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন মার্কিন হামলায় নিহত জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। তাকে হত্যার পর ইরাকের শিয়া মিলিশিয়াদের মধ্যে পুনরায় ফাটল ধরতে শুরু করেছে। এই বিভক্তি ঠেকিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে দিয়েছে তেহরান। ঐক্যবদ্ধ শিয়া মিলিশিয়ারা যাতে ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের বিতাড়িত করতে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

হাসান নাসরাল্লাহ

খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার লেবাননের বৈরুতে এক বৈঠকে এই অনানুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে খবরে আরও বলা হয়, ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করার উদ্দেশ্য থেকেই বৈঠকে এই দায়িত্ব নাসরাল্লাহকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বৈঠকে নেতৃত্বহীনতার বিষয়টি উঠে আসে। সোলেইমানি ও শিয়া মিলিশিয়া নেতা মুহান্দিসের মৃত্যুর পর ইরাকি গোষ্ঠীগুলোর পুরনো দ্বন্দ্ব পুনরায় জেগে উঠতে শুরু করায় নেতৃত্বহীনতার আশঙ্কা তুলে ধরা হয়।

৩ জানুয়ারি সোলাইমানি ও মুহান্দিস নিহতের বেশির ভাগ মিলিশিয়া নেতা তেহরান ভ্রমণ করেন। তবে ইরান যাওয়ার পূর্বে তারা ইরাকের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা মুক্তাদা আল-সদরের সঙ্গেও দেখা করেন। যাতে করে শিয়া ঐক্যের প্রমাণ পাওয়া যায়।

বৈঠকগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক গুরুত্বপূর্ণ শিয়া নেতা বলেন, অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ের পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করাই ছিল এসব বৈঠকের লক্ষ্য। এমনকি সদরের সঙ্গে বৈঠকও ছিল একই উদ্দেশ্য নিয়ে। যাতে করে বিরোধের অবসান ঘটিয়ে তাকে নিজেদের বলয়ে নিয়ে আসা যায়।

বৈরুতে নাসরাল্লাহের আয়োজনে বৈঠকটির লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য স্থাপন করা বলে জানিয়েছেন এতে অংশ নেওয়া এক কমান্ডার। তিনি বলেন, সোলাইমানি ইরাকে যে দায়িত্ব পালন করছিলেন সেই একই দায়িত্ব পালনের জন্য নাসরাল্লাহকে দায়িত্ব দিয়েছে ইরান।

ওই কমান্ডার আরও বলেন, ইরাকের শিয়া গোষ্ঠীগুলোকে কীভাবে পরিচালনা করা হবে তা নির্ধারিত করতে ইরানের অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। কিন্তু প্রতিরোধ অব্যাহত থাকায় কাউকে না কাউকে দায়িত্বে থাকতে হবে। ফলে ইরান চেয়েছে গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যে মতভিন্নতা রয়েছে, তা যেমন আছে তেমনই থাকুক।

শিয়া নেতা বলেন, ইরান এখন খুব সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইরাকে খামেনি যে পদ্ধতি নিয়েছেন তা আর সফল না। ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী ইরাকে অস্থিতিশীলত তৈরি করেছে যা এখন তাদের জন্য বোঝা হয়ে পড়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এছাড়া কাউকে সোলাইমানির স্থলাভিষিক্ত করা প্রয়োজন। কুদস ফোর্সের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিহত জেনারেলের সহকারী জেনারেল ঘানিকে। কিন্তু তিনি অনর্গল আরবি বলতে পারেন না। সোলাইমানির অধীনে তিনি আফগানিস্তানের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে তার তেমন কোনও ধারণাও নেই।

মিডল ইস্ট আই’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে নাসরাল্লাহর উদ্যোগে ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো তাদের মতবিরোধ দূর করে পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের (পিএমএফ) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে হাদি আল-আমিরিকে দায়িত্ব দিতে সম্মত হয়েছে।

পিএমএফ'র নতুন চেয়ারম্যান হাদি আল-আমিরি

আমিরির বদর অর্গানাইজেশন হলো ইরাকের সবচেয়ে পুরনো প্রভাবশালী আধা সামরিক সংগঠন। ১৯৮২ সালে সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।  ৬৬ বছরের আমিরি ইরান সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক। তিনি খামেনির অনুসারী এবং ইরানের প্রতি তার আনুগত্য প্রশ্নাতীত।

এতে আরও বলা হয়েছে, ইরানবিরোধী সদরও নির্দিষ্ট শর্তে পিএমএফের নেতা হিসেবে আমিরিকে মেনে নিতে সম্মত হয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, ইরাকের শিয়া ধর্মীয় নেতা সিস্তানির সঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। খামেনি ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু শুক্রবার এক খুতবায় সিস্তানি ইরান ও আমেরিকাকে ‘বিদেশি’ বলে অভিহিত করে ইরাকের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে বলেছেন। ফলে এসব বিরোধ অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন নাসরাল্লাহ।

সংবাদমাধ্যমটির পক্ষ থেকে হিজবুল্লাহর লেবানন কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

/এএ/
সম্পর্কিত
রাজনীতিকদের বিরোধে ক্ষোভ বাড়ছে ইসরায়েলি সেনাদের
দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭
যুদ্ধবিরতির আলোচনা: উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরতে দেবে ইসরায়েল
সর্বশেষ খবর
ভিকারুননিসায় জালিয়াতি করে আরও ৩৬ ছাত্রী ভর্তির তথ্য ফাঁস
ভিকারুননিসায় জালিয়াতি করে আরও ৩৬ ছাত্রী ভর্তির তথ্য ফাঁস
পানিতে ডুবে ভাইবোনসহ ৩ শিশুর মৃত্যু
পানিতে ডুবে ভাইবোনসহ ৩ শিশুর মৃত্যু
‘এমপি হতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলবো, এটুকু অন্যায় করবো-ই’
‘এমপি হতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলবো, এটুকু অন্যায় করবো-ই’
ইডি হেফাজতে আরও ৪ দিন কেজরিওয়াল
ইডি হেফাজতে আরও ৪ দিন কেজরিওয়াল
সর্বাধিক পঠিত
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা