যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে দুই লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন দেশটির ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ডা. অ্যান্থনি ফাউসি। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার আলোকে তৈরি করা মডেল অনুযায়ী রবিবার (২৯ মার্চ) সিএনএন-এর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন শীর্ষক টক শোতে এমন আভাস দিয়েছেন তিনি। ফাউসির আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখের বেশি মানুষের শরীরে করোনার সংক্রমণ হতে পারে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ১১ মার্চ পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, সেদেশে ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৩৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে ২ হাজার ৪৮৮ জন। আর ৪ হাজার ৫৫৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন ফাউসি। রবিবার (২৯ মার্চ) সিএনএন-এর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন টক শোতে যোগ দেন তিনি। বলেন, ‘রোগ বিশ্লেষণমূলক মডেলগুলোতে সবচেয়ে খারাপ ও সবচেয়ে ভালো চিত্রটি উঠে আসে। বাস্তবতা থাকে মাঝামাঝি পর্যায়ে। আমি কখনোই কোনও রোগের এমন মডেল দেখিনি যাতে সবচেয়ে খারাপ ফলটি এসেছে। তা সবসময় সর্বোচ্চ সীমাকে ছাড়িয়ে গেছে। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমরা এখন যা দেখছি তার ভিত্তিতে আমি বলতে চাই মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ থেকে দুই লাখ পর্যন্ত হতে পারে। তবে আমি এ হিসাবকে চূড়ান্ত বলে ধরে নিতে চাই না।’
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮১ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা জানিয়েছিলেন ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ হতে পারে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। জুন মাসের পর থেকে ভাইরাসটির প্রকোপ কমতে শুরু করলেও জুলাই মাসের শেষ নাগাদ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু হতে থাকবে।
ওই গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় হাসপাতালের ওপর চাপ বাড়বে। মহামারির চূড়ান্ত পর্যায়ে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ও প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটরেরও সংকট দেখা দিতে পারে। সবেচেয়ে বেশি উপদ্রুত নিউ ইয়র্কে এখনই ভেন্টিলেটরের টান পড়ছে।