লকডাউন আরোপ ছাড়াই করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির ইউরোপীয় অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, জনসাধারণের প্রত্যেকেই যদি মাস্ক পরার মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মগুলো অনুসরণ করে তাহলে লকডাউন এড়ানো সম্ভব। বর্তমানে ৬০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরছে জানিয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই সংখ্যা ৯৫ শতাংশে নেওয়া গেলে লকডাউনের প্রয়োজন পড়বে না। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মহামারির প্রথম দফা সংক্রমণের প্রভাব সামাল দিতে থাকা ইউরোপীয় দেশগুলোতে নতুন করে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত বুধবার ইতালিতে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৭৫৩ জনের। দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরুর পর এটাই একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যা। আর পোল্যান্ডে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৬৩৭ জনের। এছাড়া অঞ্চলটির অন্যান্য দেশগুলোতেও সংক্রমণ বাড়ছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে এখনও লাখ লাখ মানুষ লকডাউনের মধ্যে থাকছে। এর কারণে তাদের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন পড়ছে। তাছাড়া লকডাউনের কারণে অনেকে চাকরি হারানোর পাশাপাশি বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়া ছাড়াও দীর্ঘ দিন ঘরে থাকায় লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনাও বাড়ছে।
এসব ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে লকডাউন ‘সর্বশেষ উপায়’ হওয়া উচিত বলে জানান ডব্লিউএইচও’র ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক হ্যানস ক্লুজ। করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে সহায়তার জন্য তিনি জনসাধারণকে স্বাস্থ্য নির্দেশনা অনুসরণের আহ্বান জানান। প্রত্যেকের মাস্ক পরার ওপর জোর দিলেও তিনি সতর্ক করে বলেছেন এটির সঙ্গে স্বাস্থ্য বিধির অন্যান্য নিয়মগুলোরও সমন্বয় করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি প্রত্যেকেই আমাদের নিয়মটুকু অনুসরণ করি তাহলে লকডাউন এড়ানো সম্ভব।’
ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হ্যানস ক্লুজ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, করোনা বিধিনিষেধ খুব দ্রুত শিথিল করা হয়ে গেলে তার নেতিবাচক প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে। তিনি বলেন, এসব বিধিনিষেধ শিথিল করা যেতে পারে কেবল ধাপে ধাপে।