ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম ও কৃষি আইনসহ বিভিন্ন নীতির প্রতিবাদে এবং করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা, রেশন দেওয়াসহ ৭ দফা দাবিতে দেশজুড়ে ধর্মঘট করছে কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন। কৃষকদের সংগঠনগুলো এ ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বন্ধ, অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে। ‘দিল্লি চলো’ ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক দিল্লি রওনা হয়েছেন। তবে ধর্মঘট ঠেকাতে মরিয়া কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। দিল্লির দিকে এগোতেই কৃষকদের লক্ষ্য করে জলকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়া হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ধর্মঘটের সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন দেখা গেলেও মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বেশিরভাগ কলকারখানা বন্ধ রয়েছে; যেগুলো খোলা রয়েছে সেখানেও শ্রমিক উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় কম।
পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস কিছু এলাকায় ধর্মঘটবিরোধী মিছিল করলেও এখন পর্যন্ত কোথাও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া বা সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেবল কলকাতাতেই পুলিশের ৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অন্যান্য রাজ্যে ধর্মঘটের কারণে যানবাহন চলাচল সামান্য বিঘ্নিত হয়েছে।
এরই মধ্যে হাজার হাজার কৃষক পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থান থেকে দিল্লির পথে রওনা হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হরিয়ানায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পাঞ্জাবের সঙ্গে তাদের সীমান্ত সিল করে দিয়েছে। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ রাজ্যে বৃহস্পতিবার পুলিশ কৃষকদের উপর কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার পাশাপাশি জলকামানও ব্যবহার করেছে।
আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, হিসারে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। বিভিন্ন এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। গুরগাঁওয়ে কৃষক নেতাদের সঙ্গে স্বরাজ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট যোগেন্দ্র যাদবকেও আটক করেছে পুলিশ। পাঞ্জাব থেকে দিল্লি অভিমুখে রওনা দেওয়া লাখো কৃষকদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তাদেরকে যেখানে আটকানো হবে সেখানেই বসে পড়বেন তারা।
করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে দিল্লিতে কোনো ধরনের সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। কৃষকদের সমাবেশের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে তারা। ধর্মঘট মোকাবিলায় উড়িষ্যায় জারি হয়েছে এসেনসিয়াল সার্ভিস মেইনটেনেন্স অ্যাক্ট (এসমা)। এ আইনের অধীনে নির্দিষ্ট কিছু খাতের শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার রহিত করা আছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থাও ধর্মঘটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।