দেশের ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্রগুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানগুলো বিদেশিদের কাছে তুলে ধরতে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আর গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান তিনি। তার কথায়, ‘আমাদের ঐতিহ্যসহ পর্যটনের আকর্ষণীয় স্থানগুলো চমৎকারভাবে তুলে ধরতে হবে।’
বিদেশি পর্যটকদের প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, ‘তারা আমাদের অতিথি। বিদেশি ভ্রমণপিপাসুরা যাতে নির্বিঘ্নে ও আনন্দঘন পরিবেশে বাংলাদেশে বেড়াতে পারেন ও বাঙালি আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশি পর্যটক আগমন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অন অ্যারাইভাল ভিসা প্রাপ্য দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করাসহ মিশনগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে ই-ভিসা প্রদান করছে।’
রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, ঢাকা শহরকে ২০১৯ সালের জন্য ‘ঢাকা দি ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম’ ঘোষণা করা হয়েছে। মো. আব্দুল হামিদ বলেন, ‘পর্যটনের অপার সম্ভাবনার কথা ভেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই রাষ্ট্রীয়ভাবে পর্যটন শিল্পের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, যা আজ বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়নের অগ্রপথিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মতোই পর্যটন বিকাশে কাজ করে যাচ্ছেন।’
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) নবম বাংলাদেশ ট্রাভেল ও ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) উদ্বোধন করে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। তিনি মনে করেন, বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে আগ্রহী করে তুলতে এ ধরনের মেলা ইতিবাচক অবদান রাখবে। একইসঙ্গে বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত, পর্যটন শিল্প বিকশিত ও জাতীয় অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। পরে তিনি মেলায় বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।
তিন দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে ট্যুর অপারেশন অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। সংগঠনটিকে সহযোগিতা করছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড, এফবিসিসিআই, পর্যটন পুলিশ, পিএটিএ বাংলাদেশ চ্যাপ্টার ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড।
মেলায় বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশ অংশ নিচ্ছে। অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে নেপাল, ভুটান, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিলিপাইন ও মালদ্বীপ। এসব দেশের সেমিনার, গোলটেবিল বৈঠকসহ পর্যটন বিষয়ক উপস্থাপনা রয়েছে মেলায়। গোলটেবিল বৈঠক দুটির আলোচনার বিষয় ‘বৌদ্ধ সার্কিট পর্যটন অঞ্চল’ ও ‘এক হাজার বছরের ইতিহাস ও ঢাকার ঐতিহ্য’।
উদ্বোধনী আয়োজনে টোয়াবের সভাপতি তৌফিক উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আতিকুল হক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান কবির, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস ও টোয়াব পরিচালক (ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার) মো. তাসলিম আমিন শোভন প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, মেলায় ১৬০টি স্টল ও ১৫টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। মেলা চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা।
সূত্র: বাসস