X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

নয়নাভিরাম কারুকার্যময় কান্তজীর মন্দির (ভিডিও)

জার্নি রিপোর্ট
২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৪০আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৪৭


উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর জেলার কান্তজীর মন্দির একনামে সবাই চেনে। বাংলাদেশে যত পুরনো মন্দির রয়েছে সেগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। প্রাচীন মন্দিরটির বয়স প্রায় ৩০০ বছর। কান্তজীউ মন্দির নামেও এর পরিচিতি আছে। প্রতি বছর দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক এটি দেখতে ভিড় জমান।

হিন্দু ধর্মের কান্ত বা কৃষ্ণের মন্দির এটি, যা লৌকিক রাধা-কৃষ্ণের ধর্মীয় প্রথা হিসেবে বাংলায় প্রচলিত। নির্মাণশৈলীর জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের মধ্যে এই প্রাচীন মন্দিরের জনপ্রিয়তা ব্যাপক।

জনশ্রুতি রয়েছে, মন্দিরের নির্মাণ সামগ্রী সুদূর আসামের পর্বত ও হিমালয় থেকে আনা হয়েছিল। এর নির্মাণকাজের জন্য বেশিরভাগ কর্মী পারস্য থেকে এসেছিলেন।

দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে ও কাহারোল উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সুন্দরপুর ইউনিয়ন। সেখানে দিনাজপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পশ্চিমে ঢেঁপা নদীর তীরে অবস্থিত কান্তজীর মন্দির। এর উত্তর দিকের ভিত্তিবেদীর শিলালিপি অনুযায়ী, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা জমিদার প্রাণনাথ রায় নিজের শেষ বয়সে মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু করেন। ১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন জমিদার। এরপর তার পোষ্যপুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে নির্মাণকাজ শেষ করেন।

মন্দিরের বাইরের দেয়াল জুড়ে পোড়ামাটির ফলকে লেখা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি, উদ্ভিদ, প্রাণীর জ্যামিতিক চিত্র ইত্যাদি। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫ হাজারের মতো টেরাকোটা টালি আছে। ওপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দিরটি। মন্দিরে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে দুটি বড় বড় পায়রার বাসা। এজন্য এর সৌন্দর্য আলাদাভাবে চোখে পড়ে।

নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। দুটি ইটের স্তম্ভ দিয়ে খিলানগুলো আলাদা করা হয়েছে। স্তম্ভগুলো সুন্দর অলঙ্করণযুক্ত। নিচতলায় ২১টি ও দোতলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে। তবে তৃতীয় তলায় দরজা-খিলান আছে মাত্র তিনটি করে। শুরুতে চূড়ার উচ্চতা ছিল ৭০ ফুট। ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে কান্তজীর মন্দির ভূমিকম্পের কবলে পড়লে চূড়াগুলো ভেঙে যায়। মহারাজা গিরিজা নাথ এতে ব্যাপক সংস্কার করেছিলেন। তবে চূড়াগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।

অসাধারণ মন্দিরটি দেখতে চাইলে ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে দিনাজপুর যেতে হবে। দিনাজপুর শহর থেকে অটোরিকশায় চড়ে কান্তজীর মন্দিরে যাওয়া যায়। কারুকার্যময় ঐতিহাসিক এই স্থাপনা দেশের প্রাচীন ইতিহাসের একটি অংশ। তাই ইতিহাসের ছোঁয়া পেতে এবং একটি অসাধারণ শৈল্পিক স্থাপনা দেখতে চাইলে কান্তজীর মন্দিরের বিকল্প নেই।

পাণ্ডুলিপি: আহসান রনি, ভিডিও সম্পাদনা: নাঈম সিদ্দিকী

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা চাইলেন ওবায়দুল কাদের
বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা চাইলেন ওবায়দুল কাদের
৭ বছর পর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি
৭ বছর পর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়