X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

কেরালার থিম পার্কে বিশ্বের বৃহৎ পাখির ভাস্কর্য

নওশীন মুবাশশিরা রোদেলা
২৪ অক্টোবর ২০১৯, ২১:০০আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০১৯, ২১:০৮

জটায়ু পাখির ভাস্কর্য ভারতের কেরালা রাজ্যের কোল্লামের চাদায়ামঙ্গলমে অবস্থিত জটায়ু আর্থ’স সেন্টার। এতে রয়েছে বিশ্বের বৃহৎ পাখির ভাস্কর্য। ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ অবলম্বনে গড়ে তোলা হয় এই থিম পার্ক।

কংক্রিটের ভাস্কর্যটি তৈরিতে সময় লেগেছে ছয় বছর। এর দৈর্ঘ্য ২০০ ফুট, উচ্চতা ৭০ ফুট আর ডানা ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য জুড়ে প্রসারিত। নখগুলো শুধু ইস্পাতের তৈরি। বাকি সবই কংক্রিট দিয়ে বানানো।

থিরুবনন্তপুরাম থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চাদায়ামঙ্গলম। সেখানে পৌরাণিক কাহিনি, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি, শিল্প ও রোমাঞ্চের সংমিশ্রণে সাজানো হয়েছে পার্কটি। সাহসী অভিযাত্রী ও বনভোজনপ্রেমীদের জন্য জায়গাটি আদর্শ। এখানে আরও আছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি জাদুঘর।

পার্কটির আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য নিঃসন্দেহে জটায়ু পাখির ভাস্কর্য। এটি রামায়ণের পৌরাণিক পাখি চরিত্র। পুরাণ অনুযায়ী, লঙ্কার রাজা রাবণ তার জাদুময় উড়ন্ত রথে সীতাকে (রামের স্ত্রী) অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন সীতাকে বাঁচাতে জটায়ু বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে। কিন্তু সে ব্যর্থ হয়। রাবণের তলোয়ারে কাটা পড়ে তার একটি ডানা। শেষমেষ পাথরের ওপর পড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মারা যায় পাখিটি। এ কারণে ভাস্কর্যে কেবল একটি ডানা রাখা হয়েছে।

জটায়ু আর্থ’স সেন্টারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, নারী সুরক্ষা ও সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে রাখা হয়েছে এই ভাস্কর্য। জটায়ু এমন একটি যুগের প্রতিনিধিত্ব করে যখন মানুষ, পশু-পাখি ও অন্যান্য জীবজন্তু একে অপরের যত্ন নিতো এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতো।

থিম পার্কটি ডিজাইন করেছেন রাজীব আঁচল। তিনি ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও ভাস্কর। মালয়ালাম ছবিতে কাজ করেন তিনি। তার সাজানো জটায়ু আর্থ’স সেন্টারে এসে বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা অবাক হন!

আশির দশকে চারুকলায় অধ্যয়নকালে ডিপার্টমেন্ট অব ট্যুরিজমকে ভাস্কর্যটির মডেল উপস্থাপন করেছিলেন রাজীব। ২০০৮ সালে পরিবেশবান্ধব পর্যটন প্রকল্পের প্রস্তাবনার অংশ হিসেবে কাজটি করার দায়িত্ব পান তিনি। তবে তিন বছর পর ভাস্কর্য বানানো শুরু করেন। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে পার্কটি উন্মুক্ত হয়।

পার্কে ক্যাবল কারের মাধ্যমে দর্শনার্থীরা পাখির চোখে কেরালার চমকপ্রদ দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া আগ্রহীদের জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাকৃতিক ভূখণ্ডের মাঝে অবস্থিত এই পার্কে আছে ভ্যালি ক্রসিং, ট্রেকিং, জিপ লাইন, পেইন্টবল, র্যা পেলিং, বোল্ডারিং, আর্চারি, জুমারিং ও ওয়াল ক্লাইম্বিংসহ বেশকিছু আকর্ষণীয় দুঃসাহসী অভিযানের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ।

জটায়ু অ্যাডভেঞ্চার সেন্টারের সবুজাভ এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে পর্বতের আকৃতি রয়েছে। সেগুলোতে আরোহণের সবকিছুই ডিজাইন করে রাখা। শুধু তাই নয়, ভোজনরসিকদের জন্য আছে নানান স্বাদের খাবার বিক্রির ফুডকোর্ট। এসব দোকানে খেতে খেতে অতিথিরা আশেপাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করেন। এছাড়া পার্কটিতে রয়েছে সিদ্ধ কেভ নিরাময় কেন্দ্র। এতে আধ্যাত্মিক সেবা দেওয়া হয়।

জটায়ু পাখির ভাস্কর্য যেভাবে যাবেন
জটায়ু অ্যাডভেঞ্চার সেন্টারে যাওয়া বেশ সহজ। পার্কটির নিকটতম রেলস্টেশন কোল্লামের অবস্থান প্রায় ৩৮ কিলোমিটার দূরে। আর কাছের বিমানবন্দর ত্রিবানদ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দূরত্ব প্রায় ৫১ কিলোমিটার। থিম পার্কটিতে যেতে রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের বাইরে সবসময় গাড়ি ও অটো পাওয়া যায়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী