প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে বাগেরহাট। কিন্তু করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সেই সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় অর্ধেকেরও কম জনসমাগম দেখা গেছে পর্যটন আকর্ষণগুলোতে।
বাগেরহাটে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ও হজরত খানজাহান আলী (র.) মাজার পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়। এছাড়া বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা চন্দ্রমহল, সুন্দরবন রিসোর্টসহ কয়েকটি পর্যটন স্পটে ভিড় থাকে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এখন লোকজন তেমন একটা নেই বললেই চলে।
মোংলার মা-বাবা ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল্লাহ নান্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক করোনা ভাইরাসের কারণে তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণসূচি বাতিল করেছেন। এ কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।’
তাজমহলের আদলে তৈরি করা বাগেরহাট সদর উপজেলার চন্দ্রমহল ইকো পার্কের ব্যবস্থাপক কাবুল শেখের দাবি, ‘গত কয়েকদিনে অনেক বিদ্যালয় বনভোজন করবে জানিয়েও পরে তা বাতিল করেছে। আর বিদেশি পর্যটক তো আসছেই না।’
সদর উপজেলার বারাকপুরে অবস্থিত সুন্দরবন রিসোর্ট অ্যান্ড পিকনিক কর্নারের স্বত্বাধিকারী ডা. মোশররফ হোসেনের মন্তব্য, ‘মানুষ করোনা আতঙ্কে আছে। এ কারণে পিকনিক বাতিল হয়েছে। সাধারণ পর্যটকরাও আসছেন না। গত ৭ মার্চের পর থেকে পর্যটকদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।’
বিশ্ব ঐতিহ্য হওয়ায় প্রতি বছর ষাটগম্বুজ মসজিদে অনেক বিদেশি আসে। এখানকার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাস্টডিয়ান গোলাম ফেরদাউস বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত ৭ মার্চ পর্যন্ত পর্যটক সমাগম আশানুরূপ ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বিস্তারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে। বিদেশিরা নেই বললেই চলে, দেশি পর্যটকও অনেক কম। তার কথায়, ‘এখন পর্যটন মৌসুম, কিন্তু এমন মন্দাবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।’
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ কবির বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সতর্কতা হিসেবে বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে করমজলে আসা পর্যটকদের এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলার জন্য বলা হচ্ছে।