আমাদের শরীরের জন্য সেলেনিয়াম একটি অপরিহার্য খনিজ। শরীরের ভালোভাবে কাজ করার জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে। খনিজটি বিভিন্ন এনজাইম এবং প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যাকে সেলেনোপ্রোটিন বলা হয়। আমাদের শরীরের জন্য খুব বেশি পরিমাণে প্রয়োজন হয় না সেলেনিয়াম। তবে শরীর এটি নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না। ফলে খনিজটি আমাদের খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়।
কেন সেলেনিয়াম জরুরি?
১। ফ্রি র্যাডিকেল নামে পরিচিত অস্থির অণুগুলো আমাদের কোষের ক্ষতি করে। এর ফলকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বলা হয়। এটি বন্ধ্যাত্বসহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণ। এসব রোগের ঝুঁকি কমায় সেলেনিয়াম।
২। ডিএনএ সংশ্লেষণে ভূমিকা পালন করে এই খনিজ।
৩। সেলেনিয়াম শরীরে অ্যান্টিবডি বাড়াতে সাহায্য করে, যা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। হার্ট অ্যাটাক, হাঁপানি, ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি কমায় খনিজটি।
৪। সেলেনিয়াম দীর্ঘস্থায়ী হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
কোন কোন খাবারে মিলবে সেলেনিয়াম?
- ব্রাজিল নাট সেলেনিয়ামের দারুণ উৎস। এটি ব্রাজিলে উৎপাদিত এক ধরনের বাদাম।
- বেশিরভাগ সামুদ্রিক খাবারে উচ্চ মাত্রার সেলেনিয়াম থাকে। চিংড়ি, সার্ডিন কিংবা টুনা মাছ খান পর্যাপ্ত সেলেনিয়ামের জন্য।
- চর্বিহীন মাংসে মিবে সেলেনিয়াম। মুরগির মাংস কিংবা চর্বিছাড়া গরুর মাংস খেতে পারেন খনিজটি পেতে।
- ডায়েটে সেলেনিয়াম অন্তর্ভুক্ত করার একটি সহজ উপায় হচ্ছে পাস্তা খাওয়া। এক কাপ রান্না করা পাস্তায় ৩৬ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিয়াম থাকে।
- একটি বড় ডিম দৈনিক সেলেনিয়াম প্রয়োজনীয়তার প্রায় ২৮ শতাংশ পূরণ করতে পারে। বেশিরভাগই ডিমের কুসুমে পাওয়া যায়। ডিমের সাদা অংশে প্রায় ৯ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিয়াম রয়েছে।
- ওটমিল সেলেনিয়ামের দুর্দান্ত উৎস। এক কাপ ইন্সট্যান্ট ওটমিলে ১০ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিয়াম থাকে।
- মাশরুম সেলেনিয়ামের ভালো উৎস। সেলেনিয়াম ছাড়াও অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে এতে।
- ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবারের পাশাপাশি সেলেনিয়াম মেলে চিয়া সিডে।
সতর্কতা
আমাদের শরীরের জন্য খুব বেশি পরিমাণ সেলেনিয়ামের প্রয়োজন নেই। দীর্ঘস্থায়ীভাবে উচ্চ মাত্রায় সেলেনিয়াম গ্রহণের ফলে পেশী কাঁপা, চুল পড়া, পেট খারাপ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তথ্য সহায়তা: ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক, ওয়েবএমডি ও হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিকেশন