X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

বইয়ের জগত ‘প্যাপিরাস পাব’

লাইফস্টাইল রিপোর্ট
১০ আগস্ট ২০১৮, ১৯:০০আপডেট : ১০ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৭
image

আশেপাশে অসংখ্য বই নিয়ে দিনভর মনের আনন্দে বই পড়তে পছন্দ করেন যেকোনো বইপ্রেমীই। ‘প্যাপিরাস পাব’ এমন সুযোগই করে দিচ্ছে পাঠকদের জন্য। সংগ্রহে রাখার জন্য এখান থেকে দুষ্প্রাপ্য সব বইও কিনতে পারবেন পাঠকরা।

বইয়ের জগত ‘প্যাপিরাস পাব’
প্যাপিরাস পাবের প্রতিষ্ঠাতা দুই বন্ধু প্রীতম দাস ও হাসিব হক। পেশায় একজন প্রকৌশলী আর একজন স্থপতি। দুইজনেরই নেশা বই কেনার আর অতি অবশ্যই বই পড়ার। দুর্লভ বই সংগ্রহ করার শখ থেকে ঘুরে বেড়ানো বইয়ের দোকানে এবং ফুটপাতে। বই কিনতে গিয়ে একসময় মনে হলো, প্রচুর ভালো ভালো বই নিতান্তই অপচয় হয়ে যায়। হয়তো অনাদরে পড়ে আছে, কিছুদিন পরে চলে যায় ঠোঙার কারখানায়। অথচ এই বইটি হয়তো একজন সত্যিকারের বইপ্রেমী মানুষের ঘরে সাদরে স্থান পেত। প্রথমে পরিচিত মানুষের কাছে ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে বই পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু। সেখান থেকেই প্যাপিরাস পাব শুরু করার বুদ্ধি আসে হাসিব ও প্রীতমের।  

বইয়ের জগত ‘প্যাপিরাস পাব’
বইপ্রেমীদের পছন্দের সব বই খুঁজে খুঁজে বের করে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই দুই বছর আগে যাত্রা শুরু করে প্যাপিরাস পাব। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কেন্দ্র খোলা থাকছে সপ্তাহে দুই দিন- শুক্র আর শনিবার, সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। প্যাপিরাস পাব চায় সপ্তাহে অন্তত একটি দিন বইয়ের সঙ্গে কাটাক মানুষ। আড্ডা আর গল্প হোক বইকে ঘিরে। তবে ফেসবুক পেজে এর মাধ্যমে সপ্তাহে সাত দিন চব্বিশ ঘন্টা বই কেনা যাবে, বই নিয়ে আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক, খুনসুটি সবই সেখানে চলবে।

বইয়ের জগত ‘প্যাপিরাস পাব’
‘সর্বনিম্ন বিনিয়োগে সর্বোচ্চ মুনাফা নয়, ব্যবসায়ীর কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গাও থাকে। প্যাপিরাস পাব সেই দায়বদ্ধতায় আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে। বই ব্যবসায়ী হিসাবে প্যাপিরাস পাবের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সকল প্রান্তের সকল পাঠক ও সংগ্রাহকদের মাঝে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করা’- জানালেন অন্যতম স্বত্বাধিকারী হাসিব হক। এই কর্মকাণ্ডের শুরুটা ছিল ইন্টারনেটভিত্তিক। নিছক একটি বইয়ের দোকান বানিয়ে অল্প কিছু পাঠকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব, যারা কাছাকাছি থাকেন। কিন্তু ইন্টারনেটের যে দারুণ শক্তি আছে, সেটা কাজে লাগিয়ে দেশের যেকোনো জায়গার যেকোনো পাঠকের কাছে বই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। প্যাপিরাস পাবও সেই কাজটি করছে। কিছুদিন আগেই উদ্বোধন হয়েছে নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্রের। এটি কেবল একটি বইয়ের দোকান নয়, বরং বইকে কেন্দ্র করে মুক্তবুদ্ধি চর্চার জায়গা- জানালেন হাসিব।

বইয়ের জগত ‘প্যাপিরাস পাব’
সব পাঠকের জন্য প্যাপিরাস পাব উন্মুক্ত। এখানে এলে বই কেনা জরুরি নয়। যতক্ষণ খুশি ততক্ষণ এখানে বসে বই পড়া যায়, আড্ডা দেওয়া যায়। অবশ্যই সেই আড্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বই। দ্বিতীয়ত; পাঠকের পাশাপাশি সংগ্রাহকদের কাছাকাছি যাওয়া, তাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করা এবং নতুন সংগ্রাহক তৈরি করাও প্যাপিরাস পাবের উদ্দেশ্য। দেশের অল্প কিছু জায়গা, বিশেষ করে ঢাকা ছাড়া অন্যান্য স্থানে ভালো বই পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। বইয়ের দোকান ক্রমশই বিলুপ্তপ্রায় জিনিসে পরিণত হচ্ছে। সুতরাং সারা দেশ জুড়ে যে সংগ্রাহকরা আছেন, তাদের কাছে ভালো বই পৌঁছানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম থাকা জরুরি। প্যাপিরাস পাব সেই প্ল্যাটফর্মটিই বানাতে চায়।
কী ধরনের বই মিলবে?
প্যাপিরাস পাবে রয়েছে উল্লেখ করার মতো অ্যান্টিক বইয়ের একটি চমৎকার সংগ্রহ। এর মাঝে বাংলাদেশ ও ভারতের বই তো আছেই, অন্যান্য বিভিন্ন দেশের বইও আছে। বই কীভাবে অ্যান্টিক হয়? ‘বই মানে শুধু এর ভিতরের কাগজ আর কালি নয়। এর সজ্জা ও শৈলীও গুরুত্বপূর্ণ। এখন থেকে একশো বছর আগে যে ভাষায় লেখা হতো তার সাথে এখনকার ভাষার পার্থক্য আছে। তেমনি, একশো বছর আগে বই যে ভাবে ছাপানো হতো, যে হরফে ছাপা হতো, যে কাগজে ছাপা হতো যে ভাবে বাঁধাই করা হতো, যে কায়দায় প্রচ্ছদ বানানো হতো তার অনেক কিছুই এখনকার সাথে মেলে না। একটা সময়ে প্রচ্ছদে সোনার জলে নাম লেখার চল ছিল। খুব ভালো মানের দামী বইয়ে কখনও কখনও সোনা দিয়ে গিলটি করে নাম লেখা হতো। এগুলো এখন নেই। বাংলাদেশে সত্তরের দশকে প্রচ্ছদ আঁকার যেসব স্টাইল দেখা যেত, এখনকার সাথে তার ফারাক প্রচুর। একেবারে দুর্লভ সেসব পুরনো বই মিলবে প্যাপিরাস পাবে’- জানান হাসিব।  

বইয়ের জগত ‘প্যাপিরাস পাব’
সারা বিশ্বের পাঠকপ্রিয় ক্লাসিক সাহিত্যের বই প্যাপিরাস পাবে পাওয়া যাবে। আমাদের দেশের সেবা, মধুবন, অবসরসহ বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে বের হওয়া পেপারব্যাক বই, যেগুলো জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে কালোত্তীর্ণ হয়েছে, সেইসব বই রয়েছে প্যাপিরাস পাবে। পাশাপাশি সারা পৃথিবীতে জনপ্রিয় সাহিত্যকর্মসহ অন্যান্য বইও এখানে পাওয়া যাবে। রহস্য-রোমাঞ্চ থেকে শুরু করে কমিকস, ফিকশন, আত্মজীবনী, শিল্প, আলোকচিত্রসহ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত সাহিত্যের বই পর্যন্ত সব ঘরানার বই-ই সংগ্রহে রয়েছে। রয়েছে ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই।
প্যাপিরাস পাব বিশ্বাস করে শিশুদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জাতি এবং পরিবারের জন্য জরুরি। সুতরাং শিশু-কিশোরদের উপযোগী বইও থাকছে এখানে।
সংগ্রাহকদের সুবিধার্তে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন সব অফার দেয় প্যাপিরাস পাব। ১০ এবং ১১ আগস্ট চলছে তাদের বিশেষ মূল্যছাড় অফার। 

ঠিকানা: রোড নং ৯, বাসা নং ১১৬ (দ্বিতীয় তলা), নিকেতন সোসাইটি,  গুলশান ১

/এনএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী
তিন নম্বরে থেকে সুপার লিগে মোহামেডান
তিন নম্বরে থেকে সুপার লিগে মোহামেডান
মুখ থুবড়ে পড়েছে ইউক্রেনের অস্ত্র খাত
মুখ থুবড়ে পড়েছে ইউক্রেনের অস্ত্র খাত
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?