‘শোক হোক শক্তি’- আগস্ট মাস আসলেই এই স্লোগান ধ্বনিত হয় বাংলার আকাশে বাতাসে। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হারানোর যে শোক, এই শোক বহুমাত্রিক রূপধারণ করতে পারে। এই শোক হতে পারে মুজিব আদর্শের প্রকৃত সৈনিক হওয়ার দৃপ্ত শপথ, এই শোক হতে পারে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের অদম্য প্রত্যয়। সেই প্রত্যয় নিয়ে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে চিত্রে, গানে, কবিতায় চলছে স্মরণ অনুষ্ঠান ‘শতবর্ষের পথে বঙ্গবন্ধু।’
একবার এক বাটি দুধ, একটা পান আর চার আনা পয়সা বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে এক বৃদ্ধা বলেছিলেন, বাবা আর কিছু নেই তোমাকে দেওয়ার। সেদিন বঙ্গবন্ধু এই ভালবাসায় কেঁদেছিলেন আর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, মানুষকে তিনি কখনও ধোঁকা দেবেন না। দৃপ্ত কন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘আমি সবকিছু ত্যাগ করতে পারি, তোমাদের ভালোবাসা ত্যাগ করতে পারি না।’
বঙ্গবন্ধুর এমন সব আদর্শ, দুর্লভ মুহূর্ত আর অনুভূতির কথা জানতে শিল্পকলা একাডেমিতে আর্কাইভ'৭১ এর প্রদর্শনীতে দেখা মিলল সমাজের বিভিন্ন স্তরের নানান বয়সীদের ভিড়।
শতবর্ষের পথে বঙ্গবন্ধু প্রদর্শনীর আয়োজক অপু সাহা প্রদর্শনীর অনন্যতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, আমাদের সংগঠন ‘আর্কাইভ ১৯৭১’ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সারা বিশ্ব থেকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রায় ১২ হাজারের বেশি ছবি আমরা সংগ্রহ করি। ছবিগুলোর শিরোনাম লিখতে গিয়ে আমরা একটু চিন্তা করি। যেমন ধরুন বঙ্গবন্ধুর সাদা পায়রা ওড়ানোর একটি ছবি বইয়ের পাতা বা পত্র পত্রিকায় আমরা প্রায়ই দেখি। সেখানে ছবির শিরোনামে লেখা থাকে ‘পায়রা ওড়াচ্ছেন বঙ্গবন্ধু।’ বঙ্গবন্ধু যে পায়রা ওড়াচ্ছেন তা তো ছবিতেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু তিনি কেনও ওড়াচ্ছেন, কবে, কী উপলক্ষে ওড়াচ্ছেন বা সেই ছবির পেছনের গল্প কী তা এবারের প্রদর্শনীতে প্রতিটি ছবির শিরোনাম লেখার সময় আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’
আগস্ট মাসব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আর্কাইভ ১৯৭১। শুধু প্রদর্শনী নয়। বঙ্গবন্ধু কেন, কীভাবে আমাদের জাতির পিতা হয়ে ওঠেন তা নিয়েও আলোচনা করেন বিশিষ্ট জনেরা।