শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘সাহিত্যে ঐতিহ্য-পরম্পরা: কোরীয় ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে প্রকাশনা সংস্থা ‘উজান’।
‘সাহিত্যে ঐতিহ্য-পরম্পরা: কোরীয় ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক এই আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক গৌরাঙ্গ মোহান্ত। কোরিয়ার ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ইতিহাস ও রাজনীতির নানা বাঁক পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন তাঁর প্রবন্ধে।
আলোচনায় বিশশতকের কোরিয়ার সাহিত্য এবং বাংলা সাহিত্যের কবিদের বিভিন্ন কবিতার মধ্যে যে সাজুয্য রয়েছে তা তুলে ধরেন কবি ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক আতাহার আলী খান।
সেমিনারে প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক অধ্যাপক ড. শাশ্বত ভট্টাচার্য বিশ্বসাহিত্য পাঠ ও অনুবাদের প্রয়োজনের দিকগুলো নিয়ে কথা বলেন। কোরিয়ার পঞ্চদশ শতকের কবি সান সুনের কবিতার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোরিয়ার কবিতা অনেক সহজ, অনায়াস ও আড়ম্বরহীন। কোরিয়ার কবিতার এই বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য আমাদের বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্যের মতোই।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. আলী রায়হান সরকার কোরিয়ার জনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং কে-পপ ও কে-মিউজিকের নানা প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।
কবি, প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. রিষিণ পরিমল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যেমন আমাদের জাতীয় চৈতন্যের স্বরূপ, তেমনি বিভিন্ন উপনিবেশ থেকে মুক্তিলাভের পর, স্বাধীনতা লাভের পর কোরিয়ার মানুষও তাদের মতো করে নিজেদের জাতীয় চৈতন্যকে আবিষ্কার করেছে এবং গর্বের সঙ্গে বলতে শিখেছে, ওরি নারা, বাংলা ভাষায় এর মানে হচ্ছে, আমাদের দেশ।
লোকসাহিত্য গবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক নূরুননবী শান্ত বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং বাঙালির ঐতিহ্যের নানা দিক তুলে ধরে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির এখনকার সীমাবদ্ধতা ও মুক্তির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতির দিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উজানের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেখক ও সাংবাদিক ষড়ৈশ্বর্য মুহম্মদ। তিনি বাংলায় অনূদিত ‘কোরিয়ার গল্প’, ‘কোরিয়ার কবিতা’, ‘কো উনের কবিতা’, উত্তর কোরিয়ার অজ্ঞাত লেখক বান্দির গ্রন্থ ‘ফরিয়াদ’, ‘বিটিএস: সিউল টু সোল’সহ উজান প্রকাশনের বিভিন্ন দেশের অনুবাদ সাহিত্যের কথা তুলে ধরেন।