X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১
সিকদার আমিনুল হক

কবিতায় বেঁচে থাকা কবি

ফারুক মাহমুদ
০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:০০আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৩৮

কবিতায় বেঁচে থাকা কবি
আমি তখন কাঠ-বেকার। এর আগে চাকরি করতাম একটা ওষুধ কোম্পানিতে। ভালো লাগতো না। প্রায়ই কাজ ফেলে চলে যেতাম বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে। আজকের মতো তখন এতো পত্রপত্রিকা ছিল না। আমার অফিসে আসা-যাওয়ার পথে ছিল পুরনো ঢাকার বিসিসি রোড। ওখানে একটা আড্ডা গড়ে উঠল। ওখানে যেতাম। মাঝেমধ্যে চলে আসতাম সিকদার আমিনুল হকের এলিফ্যান্ট রোডের বাসায়, সন্ধ্যায়। এখানেও একটা আড্ডা ছিল। তাঁর বন্ধুদের অনেকেই আসতেন। চাকরিটা আমার ভালো লাগছে না, দায়িত্বে অবহেলা করছি, বিষয়গুলো সিকদার ভাইয়ের চোখ এড়ায়নি। একদিন হুট করে চাকরিটা ছেড়েই দিলাম।

দিনরাত্রি নেই, সিকদার ভাইয়ের বাসার আড্ডায় জমে গেলাম। এর মধ্যে, এক বিকেলে সিকদার ভাই একটি শুভ সংবাদ দিলেন—তাঁর এক বন্ধু একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা করছেন, আমি চাইলে ওখানে আমার চাকরির ব্যবস্থা হতে পারে। সে কি আর বলতে। চাকরি হয়ে গেল। সিকদার ভাইও তার ‘ইঞ্জিনিয়ারিং উপদেষ্টা’ প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। শুরু হলো আমাদের অভিযাত্রা। একসময় বহু অভিমানে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া আবু কায়সার টাঙ্গাইল থেকে চলে এলেন সিকদার ভাইয়ের চিরকুট পেয়ে। সাপ্তাহিক বিপ্লব-এ আরও যোগ দিলেন আফজাল হোসেন, মাসুক হেলাল।

সিকদার আমিনুল হক তখন শনাক্তযোগ্য কবি, কিন্তু পত্রিকা প্রকাশের কারিগরি জ্ঞান তেমন না থাকায় তিনি এ ব্যাপারে অনেকটাই নির্ভর করতেন তার কর্মীবাহিনীর ওপর। তিনি লেখালেখি করতেন। যথাসময়ে অফিসে ঢুকেই লিখতে বসতেন। একটা লেখা শেষ করেই বলতেন, ফারুক আর কী লিখতে হবে? পত্রিকার প্রচ্ছদকাহিনী থেকে শুরু করে ‘বনৌষধি’, কী-না লিখেছেন। আমাদের বলতে দেরি হত, কিন্তু সিকদার ভাইয়ের কলমে কোনো ক্লান্তি ছিল না। শুধু লেখালেখি কেন, পত্রিকা অফিসের চারিত্র—ওই যে লেখকদের আড্ডা—তা-ও জমে উঠেছিল বিপ্লব-এর সেগুনবাগিচার (এখন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর) অফিসে। হুটহাট চলে আসতেন কথাশিল্পী শওকত ওসমান। আড্ডায় তাঁর রসবিস্তার, সে-কী আর ফুরোতে চায়! আসতেন সৈয়দ শামসুল হক, রাহাত খান, শামসুল ইসলাম, সানাউল হক খান, মাকিদ হায়দার, জাহিদুল হক, হেলাল হাফিজ, শিহাব সরকার আরও অনেকে। তরুণ কবিদের ভিড় লেগেই থাকতো। বিপ্লব-এ লেখা নির্বাচনের ব্যাপারে সিকদার ভাই ছিলেন খুবই সিরিয়াস। অনেক খ্যাতিমান লেখকের কবিতাও ফেরত দিতে দেখেছি। কবিতার ছন্দ নিয়ে খুব ভাবতেন। কবিতা ফেরত দিতে দিতে অনেককেই তিনি বলতেন,...‘এ জায়গাটায় ছন্দ ঠিক নেই, বিষয়ের দুর্বলতা মানা যায়, প্রকাশভঙ্গির কমতি, কিন্তু কবিতার ছন্দের ব্যাপারে কোনো দুর্বলতা মানা যায় না।’ অনেক কবিকেই মনঃক্ষুন্ন হতে দেখেছি, আবার সম্পাদকের ধরিয়ে দেওয়া ভুলটাও অনেকে অকপটে স্বীকার করতেন।

বিপ্লব-এর একটি স্বাস্থ্যবান বিশেষ সংখ্যা (ঈদ সংখ্যা) বের হয়েছিল। ব্যাপক প্রস্তুতি, কাজের যেন শেষ নেই। অফিসে প্রায় মেলা জমে গেছে। লেখকরা আসছেন, ফটোগ্রাফারদের ব্যস্ততা, আর্টিস্টদের কাজ। সবকিছুর সঙ্গেই আছেন সিকদার ভাই, সামাল দিচ্ছেন। বিশাল এ সংখ্যাটির পরিকল্পনা তৈরির সময় বললেন, কবিতার ব্যাপারটা খুব সিরিয়াসলি দেখতে হবে। খুব কম কবিতা ছাপা হবে—এমনকি তাঁর নিজের কবিতা তো নয়ই, আবু কায়কার, ফারুক মাহমুদও তালিকা থেকে বাদ। পত্রিকার কর্মী বলে কোনো ছাড় নেই।

দেখি, কদিন থেকে কায়সার ভাইয়ের মন ভালো নেই, ম্লান বদনে অফিসে আসছেন যাচ্ছেন। জিজ্ঞেস করায় বললেন, এত বড় একটা সংখ্যা হবে, নিজেদের কবিতা থাকবে না! সম্পাদককে বললেন, তাঁর বেদনাসহ যুক্তির কথা। সিকদার ভাই এ-মজাটাই দেখতে চাচ্ছিলেন, কবিতার প্রতি আমাদের ভালোবাসার উত্তাপ কতটুকু। সেই বিশেষ সংখ্যাটি বের করার সময় দেখেছি সিকদার ভাইয়ের কর্মনিষ্ঠা। পর পর চার রাত অফিসেই কাটাতে হয়েছিল। সিকদার ভাই শুধু সকালের দিকে অল্প সময়ের জন্য বাসায় যেতেন, সেভ আর গোসলটা সেরেই আবার অফিসে। সঙ্গে করে আনতেন নানা পদের একগাদা খাবার। যথাসময়ে পত্রিকা চাই। খাবারের জন্য বাইরে গিয়ে সময় নষ্ট করা চলবে না।

সিকদার আমিনুল হকের বাসায়ই বাংলাদেশের বহু খ্যাতিমান লেখকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়—এদের সান্নিধ্য তার বাড়িতেই। সকল বয়সের বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিতেন, তিনি ছিলেন আড্ডাঅন্তপ্রাণ। উঁচু-নিচু স্বরের কত আড্ডা। আড্ডা যেমন সিকদার আমিনুল হকের প্রিয়, আবার নৈঃশব্দের অনুষঙ্গগুলোও তাকে খুব টানতো। তিনি অকারণ কোলাহল, অনর্থক সংঘ-সভা পছন্দ করতেন না। যেখানে স্থুলমাত্রার চেঁচামেচি, তিনি পারতপক্ষে ওমুখো হতেন না। এই মানুষটিকে আবার দেখেছি দেশ-জনতার প্রয়োজনে গনগনে জনসভার ভিড়ে, রাজপথের উত্তাল মিছিলে। সুধীন্দ্রনাথ দত্তর মতো ‘জনতার জঘন্য মিতালী’ তার অপছন্দের হলেও মানুষের সার্বিক মুক্তির কথাটি বিবেচনা করতেন গভীর আন্তরিকতায়। মানুষের বিজয়ে দেখেছি তার স্বস্তি, আবার মানুষের আশা পরাজিত হলে তিনি খুব ভেঙে পড়তেন।

স্বপ্ননিষ্ঠ সিকদার আমিনুল হক, মানুষকে স্বপ্ন দেখাতেও ভালোবাসতেন। বন্ধু, কত তরুণের দুর্দিনে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন, আশা আর আনন্দের ইচ্ছেটিকে জিইয়ে রাখতেন সবার মনে। আমি নিজেও হতাশায় যখন ভেঙে পড়েছি, সিকদার ভাই শোনাতেন অন্বেষণের কথা, যে-পথে ক্লান্তির চেয়ে ‘বাস্তব’ হয়ে আছে পূর্ণতার ছায়া এবং রৌদ্র। একটা ধারণা প্রচলিত আছে, সিকদার আমিনুল হক ‘সোনার চামচ’ মুখে নিয়ে জন্মেছেন। সাধারণ অর্থে ‘অনটন’ হয়তো তার ছিল না, কিন্তু অর্থসমস্যার ভিন্ন একটি রুক্ষতা তাকে তাড়া করেছে। সংসারের বড় ছেলে, দায়িত্ব কম ছিল না। আবার তার ছিল অতিমাত্রায় দায়িত্ববোধ। এড়িয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু ভীরুতা পছন্দ করেননি, জড়িয়ে পড়েছেন নানা সাংসারিত ঝামেলায়। স্ত্রীর ওপর ছিলেন তার অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। আশ্চর্য ধৈর্যশীল এই মহিলা বহুবার হতাশায় নিমজ্জিত হওয়া নির্মোহ স্বামীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। স্ত্রীর প্রতি নির্ভরতার বিষয়টি ছিল জীবন সমাপ্তির শেষ মুহূর্তটিতেও। সন্ধ্যার দিকে কাঁচা আমের ভর্তা খাচ্ছিলেন (টক এবং ঝাল ছিল তার খাদ্য তালিকার শীর্ষে), জলি ভাবি পাশে। হঠাৎ হাত থেকে প্লেটটা পড়ে গেল। তিনিও প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন, জলি ভাবি আগলে ধরে শোয়ালেন বিছানায়। সিকদার ভাই চোখ খুলে, জিজ্ঞেস করলেন : ‘জলি কী হয়েছে?’ ভাবীর উত্তর ছিল : ‘কিছু হয়নি, তুমি ঘুমাও’। সিকদার ভাই বহু অতীতের মতো পরম নির্ভরতায় ঘুমিয়ে পড়লেন। জলি ভাবি ভাবতেও পানেনি এটাই হবে তার অনিঃশেষ ঘুমযাত্র।

মৃত্যুর মাত্রা কদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক গিয়েছিলেন। ধারণা ছিল ছোটখাটো অপারেশনেই চলবে। কিন্তু ডাক্তার জানালেন আবারও ‘বাইপাস’ করাতে হবে। সেরকম প্রস্তুতি নিয়ে যাননি, দেশে ফিরতে হলো। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, দিল্লি যাবেন, ওখানে নাকি অভিজ্ঞ ডাক্তার আছেন, যিনি দ্বিতীয়বার বাইপাস সার্জারির জন্য খ্যাত। ব্যাংকক থেকে ফিরে এসব গল্প করেছেন সিকদার ভাই, আর বলেছেন অনেক স্বপ্নের কথা। দিল্লি থেকে ফিরে (‘আগে আল্লাহ’, সিকদার ভাই এভাবেই শুভ ও স্বপ্নের কথা বলতেন) অনেকগুলো বড়  কাজে হাত দিতে হবে। বলেছিলেন, সতত ডানার মানুষ-এর আরও দুটি খণ্ড লিখবেন অর্থাৎ ‘ট্রিলজি’ হবে। এর জন্য একটু ইউরোপ ভ্রমণ দরকার, বিশেষ করে যেতে চান ফ্রান্স। লিখতে চেয়েছিলেন একটি ভ্রমণ কাহিনী, হাত দেবেন উপন্যাস লেখায়... অনেক অনেক স্বপ্নের কথা। গুলশানের নিরিবিলি বাসায় উঠেছিলেন শুধু লেখালেখি আর জম্পেশ আড্ডার আশায়। দুই ছেলে বিদেশে, বাসিন্দা বলতে ভাবি আর সিকদার ভাই। ইদানীং সঙ্গী হয়ে উঠেছিল এক তুলতুলে কুকুর। খুব ন্যাওটা। সিকদার ভাইকে দেখলে ওর আর আনন্দ ধরে না। পায়ে গড়াচ্ছে, লুঙ্গি ধরে টানছে, না-হলে সেন্ডেল জড়িয়ে শুয়ে আছে। সিকদার ভাই ওর দুষ্টুমির জন্য কখনও রাগ করলে ওর আরও বেশি অভিমান হতো। খাওয়া ছেড়ে দিত, ঘুমিয়ে থাকত গভীর আলস্যে। মান ভাঙাতেও লাগবে সিকদার ভাইয়ের আদর। প্রতিদিন, বিকেল হলেই কুকুরবালিকাটি বাইরে বেরুনোর জন্য অস্থির হয়ে পড়ত। গাড়িতে চড়ে এক চক্কর দেবে, তবে স্বস্তি। এমনি এক বিকেলে আমিও কুকুরবালিকা আর সিকদার ভাইয়ের গাড়িসঙ্গী হয়েছিলাম।

জীবনের শেষ দু-দশক লেখালেখি ছাড়া সিকদার ভাই আর কোনো ফলপ্রসূ কাজই করেননি। তার শ্রেষ্ঠ কবিতাসহ শেষ কটি বইয়ের প্রকাশনা-প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। আমরা যারা পাহাড়ে উঠেছি বেরিয়ে ছিল ২০০৩ সালের বইমেলায়। জানুয়ারির শেষ দিকে, অফিসে, হঠাৎই সিকদার ভাইয়ের ফোন, খুব উত্তেজিত। আমি যতই বলি শান্ত হতে, তিনি ততই রেগে যাচ্ছেন। মনে হলো রিসিভার হাতে কাঁপছেন। বিষয়—তার বই বেরুতে দেরি হচ্ছে কেন? বই বেরোনর সামান্য বিষয় নিয়ে এতো উত্তেজনা—এটাতো সিকদার ভাইয়ের স্বভাববিরুদ্ধ, মিলাতে পারছি না। বইমেলার শুরুর দিনে বেরুতে হবে আমরা যারা পাহাড়ে উঠেছি। মনের ভেতর রাগ ফুঁসে উঠল, মেলা শুরুর দিন বইটা না বেরুলে কি বাংলা সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে? আশ্চর্য!

সন্ধ্যায় দেখা হল প্রেসে, শান্ত, ঠোঁটে সেই পুরনো চিকন হাসির রেখাটি টানা, বহু দিনের চেনা মানুষটিই। বিকেলে টেলিফোনের ছাপ আমার মনে কিছু থাকলেও সিকদার ভাই ছিলেন স্বাভাবিক। পরে ভেবে দেখেছি, কবিতার প্রতি ভালোবাসাই ছিল তার এই উত্তেজনার কারণ। কবিতা আর কবিতার স্বপ্ন ছাড়া তিনি যেন আর কিছুই ভাবতে পারতেন না।

প্রতীকী কবিতার প্রধান প্রতিনিধি জীবনকে দেখেছেন প্রিজমের ভেতর দিয়ে, ফলে মানুষ, পরিবেশ, প্রকৃতি সবই হয়ে উঠেছে বহুমাত্রিক বর্ণিল এবং ব্যতিক্রমী। তিনি যেন শ্রদ্ধার সর্বময়তা অনুধাবন করতে গিয়ে মানুষকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রেমের কবিতা লেখার দিকে তার একটা বিশেষ মনোযোগ ছিল। এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলতেন : ‘নারীর রহস্যের জানালা খুলেই আমি ঈশ্বরের মুখ দেখতে পাই কখনও কখনও। দুঃখ আর আনন্দকে এত পাশাপাশি উজ্জীবিত রাখতে প্রকৃতিতে আর কেউ পারে না বলেই নারীই বোধ হয় ঈশ্বরের কাছাকাছি। তার রহস্যও এতো জটিল। ঈশ্বর যদি কিছুটা স্বচ্ছ হয়, তবে এই মুকুরেই—আর প্রকৃতির মধ্যে আচ্ছন্নভাবে। তাই কবি আর তুমি যেখানে নারী, তারই সংস্রবে থাকে ঈশ্বর-মিলিতভাবে স্তুতির পক্ষে সবচেয়ে কমনীয় ও সরল।’

অসুস্থতা ছিল তার আবাল্য সঙ্গী। মৃত্যুচিন্তা তাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করত। ধ্রুপদ নির্মাণের ভেতর স্পষ্ট-অস্পষ্টতায় ‘ধূসর মৃত্যুর মুখ’ বারবার দেখতে পেয়েছেন। ‘পদে পদে নাচে ফণা/পথে পথে কালো যবনিকা/কাতর ক্রন্দন/কামনার কবর-বন্ধন!/কাফনের অভিযান, অঙ্গার সমাধি!/মৃত্যুর সুমেরু বারবার উঠিতেছে কাঁদি/(জীবনানন্দ। সিকদার আমিনুল হক প্রতিনিয়তই মৃত্যুযাপন করতেন। উপলব্ধি করেছিলেন ‘মৃত্যুযাপন করতে করতেই অকস্মাৎ তিনি পাড়ি জমালেন অনিঃশেষ অন্ধকারের পথে। বনানী কবরস্থানে যখন সিকদার আমিনুল হকের লাশ নেওয়া হল, তখন প্রচণ্ড রোদ। রোদের ভয়াবহতায় তার অন্তিম আশ্রয়টি যেন যথার্থই ‘অঙ্গার সমাধি’। লাশ করবে শোয়ানোর পর কাফনের উপরিভাগের গিঁট খুলে দেওয়া হল, একটু পশ্চিমে কাত করা হল কবির মুখটি। হঠাৎই বিস্ময়কর ছায়া নেমে এল। রোদের তীব্রতা নয়, ছায়ার ভেতরই রচিত হল কবির অন্তিম শয়ন। প্রকৃতিকে ভালোবাসতেন কবি, প্রকৃতিও তার প্রিয় সন্তানকে গ্রহণ করল ছায়ার সৌন্দর্যে।

সিকদার আমিনুল হক জেনেছিলেন ‘সমস্ত পিপাসা মৃত, সত্য শুধু লাশকাটা ঘর’। তারপরও কর্মের নিষ্ঠা ও সততার প্রখরতা ফেলনা কিছু নয়, মানুষের মৃত্যু হয়, কাজের মৃত্যু নেই। এই আত্মবিশ্বাস থেকে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘মৃত্যু হোক, কিন্তু আমি থাকব’।

সিকদার আমিনুল হক তার বিপুল ও বিস্ময়কর কবিতার মধ্যে বেঁচে থাকবেন বহুদিন।

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন