X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাহাঙ্গীরনগরে পাখি, প্রকৃতি ও প্রশান্ত নাইপল

আখতার হোসেন
১২ আগস্ট ২০১৮, ১০:২৮আপডেট : ১২ আগস্ট ২০১৮, ১০:৩৮

জাহাঙ্গীরনগরে পাখি, প্রকৃতি ও প্রশান্ত নাইপল ২০১৬’র নভেম্বরে ঢাকা লিট ফেস্ট  উদ্বোধন করতে ঢাকায় আসেন নোবেলজয়ী লেখক ভি. এস. নাইপল। উৎসব শেষে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৃতির সঙ্গ উপভোগ করেন। গত শনিবার তার মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণা করেন তার স্ত্রী লেডি নাইপল। ৮৫ বছর বয়সে লন্ডনে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় ত্রিনিদাদে জন্মগ্রহণকারী এই লেখকের। 

ভি. এস. নাইপল ঢাকা লিট ফেস্ট উদ্বোধন করেন ১৭ নভেম্বর। ওই দিনই শেষ বিকেলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর একটি চিঠি আসে। নাইপল এখানকার পাখি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান। শুনেছি আগে থেকেই তিনি ইন্টারনেটে হাকালুকি হাওড় সম্পর্কে জেনেছেন এবং সেখানে যাবার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। কিন্তু সে ইচ্ছা আয়োজকদের পূরণ করা সম্ভব হলেও নাইপলের অসুস্থতা ছিলো বড় বাধা। ফলে বেছে নেওয়া হলো ঢাকার কাছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে তিনি বেড়াতে আসবেন এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরম পাওয়া। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। এখানে প্রায় সোয়া ২ লাখ পরীক্ষার্থী ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সকাল-বিকাল ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হবে। এ সময়ে ক্যাম্পাসে যানবাহন আর শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভিড় দেখে জানারণ্যই মনে হবে, প্রকৃতি চোখে পড়বে না, পাখির ডাক তো দূরের কথা। ফলে নাইপলের ইচ্ছাপূরণ করা কঠিন হয়ে উঠলো।

এই সমস্যাটি সামনে রেখে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে অনেকটা নিরুৎসাহী হয়ে পড়েন। কিন্তু ঢাকা লিট ফেস্টের অন্যতম সমন্বয়ক কবি শামীম রেজার প্রবল উৎসাহ ও সহযোগিতার আশ্বাসে উপাচার্য ভর্তি পরীক্ষা ও প্রাত্যাহিক অফিস কর্মসূচির ভিতরই অতিথিকে বরণ করতে মনস্থির করেন।
ঠিক হলো, ২০ নভেম্বর রোববার দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে মাত্র ৩০ মিনিটের জন্য আসবেন সস্ত্রীক ভি. এস. নাইপল। সঙ্গে থাকবেন আয়োজক কমিটির সদস্যরা এবং আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনির সদস্যরা। সিদ্ধান্ত হয় পুরো ব্যাপারটাই কঠোর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা মধ্যে রাখা হবে। সকল অনুষদের ডীন, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার আর উপাচার্যের পরিবার উপস্থিত থাকবে এই একান্ত ঘরোয়া অনুষ্ঠানে। শেষ পর্যন্ত গোপনই ছিলো, ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক আর শিক্ষার্থীরা জানতেই পারেনি এই আনন্দযজ্ঞের কথা।
সাভার গলফ গার্ডেন রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রাম সেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট দিয়ে উপাচার্য ভবনে অল্প সময়ের মধ্যেই চলে আসে নাইপলের গাড়ি বহর। ঘড়ির কাটায় সময় তখন ২ টা ৩০ মিনিট। নাইপল হুইল চেয়ারে চলাচল করেন, কিন্ত উপাচার্য ভবনে কোনো র‌্যাম্প নেই। তাঁর আসার ঘণ্টাখানেক আগে পুরানো কাঠের দরজা দিয়ে তৈরি করা হয় র‌্যাম্প। যদি তিনি ঘরে উঠতে চান তাহলে যেন তাঁকে সহজেই ঘরের মধ্যে ওঠানো যায়। মধ্যাহ্নভোজের পর কী নাশতা দিয়ে আপ্যায়ন করা যায়, তিনি আদৌ কোনো খাবার খাবেন কি না তাও জানা নেই। উপাচার্য বললেন, ‘যতই ত্রিনিদাদ আর বৃটিশ নাগরিক হোক রক্তের ভেতর তো রয়েছে ভারতীয় আতিথেয়তার ঐতিহ্য। সুতরাং কিছু খাবার তো পরিবেশন করা প্রয়োজন।’ সকালে নিজ হাতেই উপাচার্য রান্না করলেন গুড়ের পায়েস। পায়েস খাবেন কি না এটাও জানা নেই। বাসায় তৈরি করে রাখা হলো পাকোরা ও ডালপুরি।
উপাচার্য ভবনের সবুজ চত্তরে নাইপল উপাচার্য ভবনে পৌঁছলে তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার ও উপাচার্যের পরিবারের সদস্যরা। খোলা লনেই বসলেন, ড্রয়িংরুমের ভেতর বসতে আপত্তি। সবুজে ঘেরা উপাচার্যের বাস ভবনের নারকেল বীথির নিচে মৃদু ছাঁয়ায় বসা স্যার নাইপলকে দেখে মনে হচ্ছিল অনন্তকাল ধরে যেনো বসে আছেন এখানে। চেহারায় ফুটে ওঠে প্রশান্তির প্রলেপ। উপস্থিত সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় অতিথির সঙ্গে। অল্প সময়ের মধ্যেই স্যার ভি. এস. নাইপল আর ম্যাডাম নাদিয়া শুধু নাইপল আর নাদিয়াতে রূপান্তরিত হয়ে ওঠেন। অতিথিকে ঘিরে দুই পাশে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রিতরা।
লিট ফেস্টের অন্যতম কর্ণধার কাজী আনিস আহমেদ আর সাদাফ সায্ প্রাণোজ্জ্বল ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উপাচার্য নাইপলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে স্বাগত জানান। স্যার নাইপল মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন সব কথা। ম্যাডাম নাদিয়ার সহজ সাবলিল ব্যবহারে পুরো অনুষ্ঠানটি একান্ত ঘরোয়া অনুষ্ঠানে রূপ নেয়। মনে হচ্ছিল ম্যাডাম নাদিয়া অনেকদিনের চেনা এক আপনজন।
নাইপল ও অন্যান্য অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য সোফার সামনে সেন্টার টেবিলে রাখা হয়েছিলো পায়েস, অন্যান্য খাবার সঙ্গে কলা, কমলা, আপেলসহ কিছু দেশী ফল। নাইপল তেমন কিছু খেতে চাচ্ছিলেন না, কিন্তু ম্যাডাম নাদিয়ার উৎসাহ সবকিছুতেই। ম্যাডাম নাদিয়া নাইপলকে বললো, ‘ভিদিয়া এক চামচ খেয়ে দেখতে পারো।’ জিনিসটা কী জিজ্ঞেস করলো ভিদিয়া। নাদিয়া প্রথমে রাইস পুড়িং পরে হিন্দি শব্দ ক্ষীর বলতেই নিমরাজি হলো এক চামচ খেতে। এক চামচ শেষ হতে নাদিয়া আবার এক চামচ দিতে চাইলে রাজি হলেন আরো খেতে। খেতে খেতে পুরো বাটির ক্ষীরই শেষ করে ফেললেন। নাদিয়া বললেন, ‘ক্ষীর ভিদিয়ার এতো পছন্দ হয়েছে বলে পুরোটাই খেয়ে ফেলেছেন। নইলে ও একটুও ছুঁয়ে দেখতো না।’ খাবার শেষ করে উপাচার্য ফারজানাকে পরিতৃপ্তি হাসিতে ধন্যবাদ জানালেন তিনি। এই ক্ষীর উপাচার্য নিজ হাতে তাঁর জন্য তৈরি করেছেন জেনে কৃতজ্ঞতার উষ্ণতায় আবার হাত বাড়িয়ে উপাচার্যের হাত জড়িয়ে ধরেন।
স্যার নাইপলকে নিয়ে নানা কথা প্রচলিত আছে। তিনি ক্যামেরা বা বেশি জনাগম পছন্দ করেন না। তার মতের বিরুদ্ধে হলে নির্দ্বিধায় যে কোনো মন্তব্য করতেও ছাড়েন না। বিরক্ত হয়ে সহজেই ভ্রুকুচকে কিংবা কপালের ভাঁজ ফেলে তা প্রকাশ করে দেন। মেজাজী মানুষ হিসেবে পরিচিত স্যার নাইপল জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসের মায়াবী ছোঁয়ায় এক অচেনা অন্য মানুষে পরিণত হয়েছিলেন সেদিন। অতিথি হিসেবে তাঁর স্ত্রীকে একটি সুন্দর জামদানী শাড়ি আর তাঁকে দেওয়া হলো সুন্দর কাজ করা পাঞ্জাবির কাপড় আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখির অভয়ারণ্যে ভেসে বেড়ানো পাখিদের জলরঙের চিত্র।
পাখি দেখতে রওনা হলেন নাইপল প্রখ্যাত অলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন খবর পেয়ে দুপুরের আগে থেকেই উপস্থিত হন ছবি তুলতে। নাসির আলী মামুন তাঁর ইচ্ছামতো ছবি তুলতে তুলতে এক পর্যায়ে নাইপলকে অনুরোধ করেন মাথায় হ্যাট পড়ে ছবির জন্য পোজ দিতে। নাসিরের অনুরোধে সুবোধ বালকের মতো টেবিলে রাখা হ্যাটটি সুন্দর করে মাথায় বসিয়ে ছবির জন্য তৈরি হয়ে যান নিমিষেই।
চোখে মুখে কোথাও বিরক্তি নেই। সবার সঙ্গে ছোট ছোট বাক্যে আস্তে আস্তে কথা বলছেন, আর স্ত্রী নাদিয়া তাঁকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন আলাপচারিতায়। নাইপল আসার একটু পরে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ রেজা পি.এইচ.ডি গবেষক অমল চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন। ম্যাডাম নাদিয়ার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবার পর অধ্যাপক রেজা নাইপলের স্ত্রীকে জানালেন তাঁর অধীনে নাইপলের সাহিত্যকর্ম নিয়ে অমল গবেষণা করেছেন। রেজা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে নাদিয়ার কাছে অমলসহ পরিচিত হতে ইচ্ছে প্রকাশ করেন। মিসেস নাইপল ভিদিয়ার কাছে ব্যাপারটা জানানোর পর ভিদিয়া নিজেই উৎসুক হয়ে উঠেন পরিচিত হতে। দুজনকে পরিচিত করানোর পর নাইপলের চোখে মুখে ফুটে ওঠে আত্মতৃপ্তির আভা। বাংলাদেশের মতো দেশে তার সাহিত্যকর্ম নিয়ে গবেষণা হচ্ছে জেনে আনন্দে হাত বাড়িয়ে দেন দুজনের দিকে। দুজনকে নিয়ে নাসির আলী মামুন ক্যামেরায় ক্লিক করতে করতে কয়েকটি স্ল্যাপ তুলে নিলেন। নাইপল কিছু বললেন না। নাদিয়াই তার হয়ে বললেন যাকে নিয়ে গবেষণা করছো তাকে কাছে পাওয়া এটাতো তোমাদের জন্য বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। একই সঙ্গে ভিদিয়ার জন্য একটি সুখকর স্মৃতি।
খোলা আকাশের হালকা নীল চাদরে আচ্ছাদিত দিনের মৃদু আলোর আভায় স্যার নাইপল যেন আকাশে পাখির মতো উড়ে বেড়াচ্ছিলেন। ২০ মিনিটের অনুষ্ঠান কখন যে ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে কেউ টেরও পায় না। পরিযায়ী পাখি দেখার জন্য সবাই উৎসাহী হয়ে উঠলেন। উপাচার্য বাসভবন থেকে বিদায় নেওয়ার প্রাক্কালে নোবেল লরিয়েট উপাচার্যের হাত জড়িয়ে পরম উষ্ণতায় বিদায় নিলেন। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্যের সঙ্গে পরিচিতি হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন বলে বারবার উচ্চারণ করলেন প্রশংসার বাণী। একই সঙ্গে মিসেস নাইপলও উপাচার্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন, ‘তুমি ভবিষ্যতে আরো ভালো করবে এই কামনা করি।’
বিদায় নিয়ে পাখি দেখার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিকে। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভীড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাস্তাই ছিলো প্রায় বন্ধ। এতো ভীড়ের মধ্যে শ্লথ গতিতে নাইপলের গাড়ির বহর আস্তে আস্তে এগিয়ে যায়। গার্ডেনের ভিতর বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের সমারোহে অরণ্যের এই প্রাকৃতিক শোভা যে কাউকেই নিয়ে যেতে পারে আরেক জগতে। ইট পাথরের নাগরিক জীবন থেকে দূরে লেকের জলরাশির ছলচ্ছল নীরবতার ভেতর পাখির কিচিরমিচির শব্দে জানান দিচ্ছিল অতিথি পাখির উপস্থিতি। গহীন জঙ্গলের মাঝে সরু পথে গাড়িবহর থেমে যায় লেক থেকে খানিকটা দূরে। হুইল চেয়ার ঠেলে নাইপলকে নিয়ে যাওয়া হয় লেকের শেষ প্রান্তে যেখানে শ্যামল ছাঁয়ায় যেখানে দিনের আলো সময়ের আগেই নিভে যায়। প্রকৃতির মতোই আপন মহিমায় স্যার নাইপল লেকের অপর প্রান্তে অপলক চোখে তাকিয়ে থাকলেন পাখিদের জলকেলী আর নীল আকাশে বিচরণের সম্মোহনী দৃশ্যে। স্যার নাইপল যাতে বিরক্ত না হন তাই তার সঙ্গে থাকলেন শুধু ম্যাডাম নাইপল, হুইল চেয়ারের সাহায্যকারী, আর কাজী আনিস আহমেদ ও সাদাফ সায্। তাদের প্রকৃতি এক আলো-আধারীর মায়াবী জালে ঘিরে রাখে। বেশ দূরে বসে থাকেন তাঁর সঙ্গে আসা অন্যান্য অতিথিরা।

নাইপলের সঙ্গে লেখক আখতার হোসেন

স্যার নাইপল হারিয়ে যান পাখির কলতান আর গভীর অরণ্যের নিভৃতে। সন্ধ্যা নেমে আসে সকালের আগোচরে। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর। নিরাপত্তারক্ষীরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে অতিথির হোটেলের ফেরার কথা ভেবে। ফেরার কথা জানাতেই স্যার নাইপলও যেন সম্বিতে ফিরে আসেন। মনে হলো অনেকটা ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। ফেরার পথেই পরিচিত হন পাখি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ আর প্রজাপতি মেলার মনোয়ার হোসেন তুহিনের সঙ্গে। কথার ফাঁকে ফাঁকে বারবার ক্যামেরার ফ্লাশ জ্বলে ওঠে। অনেকেই নাইপলের সঙ্গে ছবি তুলতে আগ্রহী হন। চোখে বিরক্তির বদলে নীরবে সম্মতি জানাচ্ছেন আগ্রহী ভক্তদের। এক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রজাপতির কথা শুনে রাজি হয়ে গেলেন ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র সংলগ্ন প্রজাপতির অভয়ারণ্য দেখতে। প্রজাপতিদের ওড়াউড়ি আর ছোট ছোট গাছে বসে থাকা বিভিন্ন রঙের প্রজাপতি দেখে বিমোহিত হয়ে পড়েন স্যার নাইপল। এখানেও তাঁর বিরক্তির কোনো প্রকাশ দেখা মিললো না।

বিদায়ের আগে সমন্বয়ক শামীম রেজাকে বললাম, এতো লোকজন ছবি তুলছে তুমি কেনো তোমার বউ ছেলেকে ডেকে এনে ছবি তুলছো না? এই সুযোগ কী আর কখনো পাওয়া যাবে? যেই কথা সেই কাজ শামীম ওর বউ ছেলেকে ডেকে পাঠায়। বিদায়ের পূর্ব মুহূর্তেই শামীমের বউ ছেলে উপস্থিত। মিসেস নাইপলকে অনুরোধ করা হলে উনি ভিদিয়াকে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। নাইপলও গাড়ির দরজার সামনে ছবি তোলার জন্য অপেক্ষায় থাকলেন। বীথি, সোহম আর শামীম রেজার সঙ্গে স্যার নাইপল ও তাঁর স্ত্রী নাদিয়া কয়েকবার ছবির ফ্রেমে বন্দি হলেন। ক্লান্তিহীন এক অনাবিল প্রশান্তির ডানা মেলে স্যার নাইপল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচরণ করে গেলেন। রেখে গেলেন অজস্র স্মৃতি। স্যার নাইপলের চিরাচরিত স্বভাবের বিপরীতে এক সহজ সরল সাবলীল স্যার নাইপলকে বরণ করলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম একজন নোবেল বিজয়ীর পদচারণায় ধন্য হলো প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে লালিত এই বিশ্ববিদ্যালয়। নির্ধারিত ৩০ মিনিটের অবস্থানকাল আড়াই ঘণ্টায়ও শেষ হয়ে শেষ হলো না।
যারা নাইপলকে এতো কাছে থেকে দেখতে পেরেছেন তাদের স্মৃতিতে নাইপলের ভিন্ন প্রতিকৃতি জাহাঙ্গীরনগরের অপার প্রকৃতির সৌন্দর্যের সুরের মূর্ছনা স্মৃতির পটে ভেসে বেড়াবে। অভিনন্দন স্যার ভি. এস. নাইপল আপনাকে। পুনর্মুদ্রণ

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তিন লাল কার্ডের ম্যাচে মোহামেডানের খেলতে অস্বীকৃতি, আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা
তিন লাল কার্ডের ম্যাচে মোহামেডানের খেলতে অস্বীকৃতি, আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
ইরান হামলা বন্ধ করলেও ছায়াশক্তিরা সক্রিয়
ইরান হামলা বন্ধ করলেও ছায়াশক্তিরা সক্রিয়
খিলগাঁওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
খিলগাঁওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী