সবখানে অস্পৃশ্যরোগে বিচ্ছিন্নতার সতর্কতা
কেউ না কেউ ছেড়ে যাচ্ছে রঙের উঠান
প্রতিমুহূর্তে, হয়তো এরপর নিজে;
আমার মরণযাত্রা নিজেই দেখছি—কেউ এসে নিথর
দেহ নেড়েও দেখবে না, বরং মৃত্যুবাড়ির মুখোশে
দূর থেকে দিচ্ছে গালি
কতকাল অভিশপ্ত পথে হেঁটেছে;
অভুক্তজন দাঁড়িয়ে আছে, কত দূর পথ পাড়ি দিয়ে
ক্ষুধায় কাতরাচ্ছে, শুশ্রুশার মেলোড্রামা
পেছনে সাইরেন ক্ষুধার্ত কান্না;
দূর আকাশের চাঁদ, টিকরে পড়া তার আলো কিংবা জোনাকি
ঝিঁঝিঁর কান্না কোনোটাই না, ঝরাপাতার ফাঁকে একফোঁটা রোদ্দুর,
দিঘির জলে শাপলার রঙ, আদুল রাখালিয়া, সুস্থির বেদেপল্লী
বন্ধ নাগিন পাচালি,—‘এই হাওয়ার মিঠাই’ বলা ক্ষীণকণ্ঠ
গ্রামের পথে হাঁটা দুঃখী বাউল, দরবেশ
স্বেচ্ছায় বিসর্জন দিয়ে ছাউনিতে অবসন্ন, নীরব;
দেখার দৃষ্টিশক্তি, শব্দ শোনার শক্তি
ক্রম ক্ষীয়মান, একে একে খসে পড়ছে অবিচল
এখানে ওখানে অক্ষত লাশ
হয়তো মরেছে ক্ষুধার লজ্জায়
কেউ খবর রাখেনি, খোঁজ করেনি কেমন ছিল
গতকালের পৃথিবী, এমনই নিষ্ঠুর বধির
আমরা সকলেই ধাপে ধাপে চলছি মৃত্যুযাত্রায়
নির্মমতার নতুন সংস্করণ অনিচ্ছার দূরত্ব
কেউ ছুঁয়ে দেখে না পথিকের লাশ
যার সাথে হেঁটেছে, প্রেমের ফাঁদে যাপন করেছে গুহায়
বড় অচেনা এখন, অস্পষ্ট, বিটলা মানবিক
প্রেম নেই, ভালোবাসা নেই, মিথ্যে মেকি
ভেলকিবাজির দুনিয়াদারি, সকলেই প্রেম-জাদুকর
আসলে বানর-নাচের সহকারী
আমাকে দিয়েই তো তুমি, তোমাতে আমি
এককে জাতিসংঘ অস্তিত্বহীন;
বকেয়া রেখে দিচ্ছি আশার সঞ্চয়ে অদৃশ্য ঝড় থেমে যাবার পর
ভুলে যাবো একদিন মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গন করেছি
মিথ্যের জাদুতে শিখেছি চালাকি
আবার ফাঁকির মন্ত্রে চারপাশ গিলে নেব
শর্তহীন; পেছনে ফেলে প্রশ্ন
খরজমি চর্চায়
ল্যাবের ছিদ্রের ষড়যন্ত্রে চাঁদবেনের বাহাদুরি
মাটির আঁচলে ফোটা লাবণ্য লতাগুল্ম হাসে
মাড়িয়ে ফেলেছি ক্ষমতা বিস্তারে
এইতো নীরব শোধ, প্রতিশোধ, প্রতিরোধ
যতসুখ পাও বনাঞ্চল উজাড়ে
ভেদ করো মহাকাশ, নক্ষত্রমণ্ডল
অপরের সাম্রাজ্যে রাখো পদক্ষেপ বিস্তর—
জোরদখল; এ গোলক শুধু মানুষের নয়
ভুলের মাশুলে সদাইপাতি
অঝোরে কলির দেউল পার হয়ে যাব; অবশেষে
পঞ্চায়েতের বৈঠকে আসবে আবার মিথ্যে সওদাগর
অবহেলার করাল সুতায় নাচবে রাজমহল
আমরাও কেউ না কেউ করোনায় রেখে দেওয়া
প্রেমের দিব্যি সচল করে নেবো, পণ্যের বিজ্ঞাপনে
মিছে মায়া, জাদু, হাতকোদালে তৈরি উপনিবেশ, রক্তের নদী
জাদুকাটা নদীর স্রোত।