সচিত্রাভাস
যাতায়াতের ঐখানে
মেঠোপথ কোলে নিয়ে বসে আছে শিপা,
শিপা মানে আমাদের শিপা দি
যার ধান শুকানো উঠোন
পা বাড়ানো পুকুর
সম্মিলিত সাঁতারের গল্প শোনায়।
ওখানেই ঘোনাই বিবির গান
আয়নাবিবির মুখ,
ওখানেই মেঘেদের ডাকবিভাগ
সাদা পৃষ্ঠায় গেঁথে রাখে অসুখের সুঁই।
এখন চিঠি আসলেই বুঝি
সাঁতার চেনে না যে হাঁস! মূলত তারাই
শিপাদের সাইকেলে মেঘের গুলগুলি বেচে খায়।
দাঁড়ানোর দক্ষিণ দুয়ার
ভেঙে পড়ার আগে মুহূর্তের যুগপরিচয়
অনেকটাই বর্ধিত রেখার মতো দেখায়;
যে রেখা উঠে এসেছে সহজিয়া লেখায়,
যার পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে জেনে গেছি
তুমি জাহাজ থেকে পালিয়ে আসা কেউ না,
তোমার বনেদীশাখায় সমূহ অষ্টিকলতা
নিজগুণেই উর্বর করেছে দ্রাবিড়ীয় গ্রাম।
এখন ধানপথ ধরে হেঁটে যায় পাখিবেলা
মুঠে মোড়ানো বটপাতা ভেতরে ভেতরে
হাওয়া কুড়ায়। ঠিক তখন থেকে মথুরায়
অনুচ্চস্বরের দুর্বলও আর দুর্বল লাগে না।
কিছুটা অপেক্ষা তাই চিরদিনই বৈদিক
দাঁড়ানোর দক্ষিণ দুয়ার বলে মনে হয়।
যার বিনিদ্র কপাটের স্বরগোল খুলে খুলে
নিজেদের মতো নিজেরা শ্বাস নিতে থাকি।
হরিৎ আভার ডাক
সময়, চলো এবার হাততালি দেই
আকাশটা জুম করে দেখি
বাতাসে বর্ধিত হই,
বর্ধিত বর্ষায় পড়ি উন্মুক্ত জানালার বই।
চলো, আনত আয়নার অভিমুখে
সম্পাদনা করি নিজেদের মুখ
কাটাকুটির দৃশ্য।
অযোদ্ধারা ফিরে গেলে যাক,
শ্রী-ঘাটের পাশেই থাকে হরিৎ আভার ডাক।
চলো, একটা রাস্তায় গিয়ে উঠি
রাস্তার শেষ অধ্যায় ধরে হাঁটি,
ধানি জ্যোৎস্নার চর ধরে হেঁটে আসে
অহিংস মহিষের বাথান,
টের পাই, টের পাওয়ার গান গাই
গানগর্ভে জড়িয়ে থাকে আমদের অনাগত সন্তান।
কালগর্ভের পিনকোড
বিষণ্ন আয়না ঘষে লেখো রক্তমাখা বীজের কবিতা
যেটুকু সবুজ শুক্রাণু বাঁচিয়ে রাখে দুর্বাপ্রাণ!
স্নানরত সেই রক্তের কেরোসিন থেকে স্ফুরিত প্রেম
জোছনার মতো বিঁধে যায় অমৃত আত্মার গভীরে।
আত্মস্থ এই মাটির কামান থেকে বারুদমাখা
খেরোখাতায় লেখো নিমগ্ন ফসলের কবিতা;
আকাশে চাঁদ উঠবে দুইঘরা স্তনের সমান,
আয়োজন থেকে সমূহ দিনের অন্তরিত বীণ
শোনাবে প্রসন্ন মাঠের অঙ্কুরিত বীজের বিবরণ।
থালা চিত করলে পুকুর, উপর করলে পিরামিড
পুকুর ও পিরামিডসংক্রান্ত যে কয়টি অধ্যায়
চালু আছে তোমার সিলেবাসে! আঁকাও তার দেশ
লেখো তার ঋতুহীন বর্ষণমুখর ভোরের কবিতা।
শিক্ষাসফর
পাঁচক্লাস পড়া মেয়ে আমার
দশক্লাসের মাথায় উঠে বসে আছে।
দশক্লাসের ভেতর একটা ট্রেন
আত্মপীড়নের ঘণ্টা দিয়ে যায়।
মনটা তখন সান্ধ্যভাষায়
বৃষ্টিভেজা পৃষ্ঠাগুলো খুঁটে খুঁটে পড়ে;
পড়ার ভেতর কোনো শব্দ নেই
তবু গৃহস্থকথার কদম ফুল ফোটে।
ঠোঁটে ঠোঁটে মেঘপত্র ছাপাই,
বাঙ্গালা টু দিলঘরানার চাপাই
ঘুরে ঘুরে এসে লিখি!
‘পাশ-ফেল ব্যাপার না গো মেয়ে!
একবার যদি পাশের সিটে
বসতে পারি না বসার দিনে!
তবে আর উঠব না কোনো ট্রেনে
ফিরব না আর পিঁপড়ে খাওয়া দেশে।