জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাদ থেকে পড়ে অমিত কুমার বিশ্বাস নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকাল সাড়ে ৫টায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) দায়িত্বরত চিকিৎসক ড. ইফরান জানান চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে নিহত জাবি শিক্ষার্থীর রুম থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার রুমমেটরা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা বালিশের নিচ থেকে এ সুইসাইড নোট পান। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার রুম পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে নোটের বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সোহেল আহমেদ।
সুইসাইড নোটে লিখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে পড়েছি, অজান্তেই। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত, আর না। এবার মুক্তি চাই। প্রিয় মা, বাবা, ছোটবোন সবাই পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
এছাড়াও তার পড়ার টেবিলে আরও কয়েকটি সুইসাইড বিষয়ক মন্তব্য লেখা চিরকুট পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে নোটের লেখার সঙ্গে তার আগে খাতার লেখার মিল রয়েছে। এছাড়া তার রুমের পড়ার টেবিলে সুইসাইড বিষয়ক লেখা আরও মন্তব্য দেখা গেছে। আমরা আপাতত রুমটি বন্ধ করে রেখেছি। পুলিশ এসে বাকিটুকু দেখবে।’
অমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা গ্রামের বাড়ি খুলনায়। বাবা অজয় কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীতে কর্মরত আছেন। অমিত পরিবারের একমাত্র সন্তান।
অমিতের রুমমেট ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন ঘোষ (উদ্ভিদ বিজ্ঞান-৪৫) বলেন, অমিত খুবই ভালো ছেলে। তার কোনও ধরনের হতাশা ছিল না। সে নিয়মিত মেডিটেশন করতো। তবে ইদানিং একটু অসুস্থ ছিল। এছাড়া কোনও সমস্যা ছিল না। আজ দুপুরে আমরা বন্ধুরা মিলে একসঙ্গেই খাবার খেয়েছি। অমিতও আমাদের সঙ্গে ছিল। পরে সে হলে চলে আসে। কিছুক্ষণ পর শুনি সে ছাদ থেকে পড়ে গেছে।
