ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেছেন। সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনে অনশন শুরু করেন তারা। রাত পৌনে ৯টার দিকে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার অনশনে ছয় শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অসুস্থ হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন মনিজা আক্তার, লুনা খাতুন, সুমাইয়া খাতুন, রুমানা পারভীন, নুশরাত জাহান প্রিয়া ও সালমা খাতুন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, উর্দু বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল ২৫ আগস্ট প্রকাশিত হয়। এতে ৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জনের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ছয় জন নিয়মিত ও দুজন অনিয়মিত শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশ হয়নি। এই ছয় শিক্ষার্থী একটি করে কোর্সে ফেল করেছেন। বাকি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুধুমাত্র তিন শিক্ষার্থী সিজিপিএ-৩-এর ওপরে আর সবাই সিজিপিএ-৩-এর নিচে পেয়েছেন। ফল প্রকাশের পর থেকে শিক্ষার্থীরা ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কয়েক দফা আশ্বাস দিয়েও সমাধান দিতে পারেনি।
জানতে চাইলে অনশনে বসা শিক্ষার্থী বায়েজীদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের প্রকাশিত ফল অসংগতিপূর্ণ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ফল খারাপ করে দেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে প্রায় ১৫ বার আলোচনায় বসেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনও সমাধান পাইনি। আমরা সেটির সমাধানের জন্যই মূলত আজ অনশনে বসেছি। আমরা আমাদের ফল পুনর্মূল্যায়ন চাই।’
রাত ৮টার দিকে উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে বসে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক শেষে উপাচার্যসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আন্দোলনস্থলে আসেন। পরে তারা আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মারুফ হাসান বলেন, ‘উপাচার্য ফল বিপর্যয়ের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটি তাদের প্রতিবেদন দেবেন। আমরা তার ওপর আস্থা রেখে আন্দোলন স্থগিত করেছি। পরে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের মুখে পানি দিয়ে অনশন ভাঙান।’
এর আগে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আমরা বিভাগের ওপর আস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু তারা গত চারটি মাস কোনও সমাধান দিতে পারেনি। তবে এবার আমি নিজেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আশা করছি, একটি সুষ্ঠু সমাধান হবে।’