আগুন লাগার ঘটনায় ধসে পড়া গুলশান কাঁচাবাজার মার্কেট ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরানোর কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। টানা ১৩ দিনে তিনতলা এ ভবনের রড ও কংক্রিটের প্রায় ছয় হাজার টন ধ্বংসাবশেষ ও অন্যান্য বর্জ্য সরানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে অপসারণ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জানিয়েছে, ৩ জানুয়ারি গভীর রাতে ডিএনসিসির মালিকানাধীন গুলশান-১ কাঁচাবাজার মার্কেট ভবনে আগুন লাগে। এতে ভবনের একাংশ ধসে পড়ে ও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দমকল বাহিনীর কর্মীদের প্রচেষ্টায় আগুন নেভানোর পর ডিএনসিসি ও সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের যৌথ উদ্যোগে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর নাগাদ শেষ হয় অপসারণ কাজ।
ধ্বংসাবশেষ অপসারণ কার্যক্রম সমাপ্তি ঘোষণা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে কাচাবাজার মার্কেট প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএনসিসি। অপসারণ কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়ে মেয়র আনিসুল হক বলেন, অগ্নিকাণ্ডে মার্কেট ভবনটি সম্পূর্ণ ধসে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ২০/২২টি ইউনিটের চেষ্টায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
মেয়র বলেন, ১১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড আমাদের আমন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল ও যানবাহন নিয়ে ভেঙে পড়া মার্কেটের ধ্বংসস্তূপ অপসারণের কাজ শুরু করে। ৮ দিনে সব ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে। এ কাজে সার্বক্ষণিক ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিযুক্ত ছিল। সবার সহযোগিতায় ১৫ দিনে অপসারণ কাজ শেষ হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। দোকান মালিকদের নিরাপত্তায় ডিএনসিসি পাকা মার্কেট পরীক্ষার জন্য ১২ জানুয়ারি থেকে বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীদের বিষয়ে মেয়র বলেন, মার্কেট ধসে পড়ায় ২৯১ জন দোকানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের জন্য পার্কিংয়ের জায়গায় ইতোমধ্যে ৮৮টি অস্থায়ী দোকান নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং শুক্রবার থেকে ভবনের খালি স্থানে অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু হবে। আগুনের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘ক্ষতির হিসাব এখনও সম্পন্ন হয়নি। কাজ চলছে।’
ডিএনসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গুলশান কাচাবাজার মার্কেট ভবনের রড ও কংক্রিটের প্রায় ছয় হাজার টন ধ্বংসাবশেষ ও অন্যান্য বর্জ্য সরানোর হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব ইঞ্জিনিয়ারিং কোর মেজর জেনারেল মো. সিদ্দিকুর রহমান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর আবদুর রাজ্জাক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদ আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ ভূঁইয়া, ডিএনসিসি সচিব দুলাল কৃষ্ণ সাহা, যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী লে. কর্নেল এমএম সাবের সুলতান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের মেজর শাকিল নেওয়াজ প্রমুখ।
ওএফ/এমএনএইচ/