‘স্কুলে মাঠ না থাকায় চাইলেও আমরা শিশুদের মাঠে নামতে দিতে পারছি না। তাদের চার দেয়ালে বন্দি রাখতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো— যে চার দেয়ালের মাঝে শিশুরা বেড়ে উঠছে, তার জন্য সেই চার দেয়ালই কি যথেষ্ট? ওই চার দেয়ালকেই কি আমরা শিশুর জন্য যথেষ্ট আনন্দদায়ক করে তুলতে পারছি?’
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘চার দেয়ালে বন্দি শৈশব’ শীর্ষক বৈঠকিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি’র সম্পাদক নবনীতা চৌধুরী এসব কথা বলেন।
বৈঠকিতে নবনীতা চৌধুরী বলেন, ‘৮০ থেকে ৯০-এর দশকে আমরা যারা বেড়ে উঠেছি, তখন পাড়া বা মহল্লায় মাঠ থাকলেও চাইলেই আমাদের অনেকেই মাঠে নামিনি, অনেককেই মাঠে নামতে দেওয়া হয়নি। তখনও অনেকেই ছিলাম যাদের দাদা বাড়ি বা নানা বাড়িতে নিয়মিত যাওয়ার রেওয়াজ ছিল না। তাই তখনও কিন্তু আমাদের অনেককেই চার দেয়ালে বড় হতে হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা চাইলেও শিশুদের মাঠে নামতে দিতে পারি না। কারণ স্কুলগুলোতে তো এখন মাঠই নেই।’
ডিবিসি সম্পাদক আরও বলেন, ‘চার দেয়ালের মধ্যে শিশুর সময়কে আমরা যথেষ্ট আনন্দদায়ক ও মজাদার করে তুলতে পারছি কিনা, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। আমরা অভিভাবকরা শিশুকে সারাদিনে কতটুকু সময় দিচ্ছি নাকি একদমই দিচ্ছি না— সেটা ভাবার বিষয়। যা আমরা আমার শিশুকে দেখতে দিচ্ছি, সেটাও কি আমি ধারণ করি?’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সময়ে এসে অনেকেই ফ্ল্যাট বাড়িতে স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন। তারা শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় আয়োজন করছেন। এভাবেই চার দেয়ালের মধ্যেও শিশুদের সময়কে আনন্দদায়ক, মজাদার ও বৈচিত্র্যময় করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এটা ঠিকভাবে করতে পারলে সেটাও মন্দের ভালো।’
বৈঠকিতে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তাজুল ইসলাম, সংগীতশিল্পী ও অভিভাবক রাহুল আনন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান এবং বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।
এটিএন নিউজের মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এটিএন নিউজে। এছাড়া, বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ থেকেও বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন-
‘সমাজই শিশুদের বন্দিদশায় ঠেলে দিতে বাধ্য করছে’