ব্যক্তির সব ধরনের তথ্য যাতে সুরক্ষিত থাকে, কেউ যাতে অপব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সরকার আইন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগোযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এছাড়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ আইন ২০১০ (সংশোধিত) আবারও সংশোধন করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। মন্ত্রী আজ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমার ডাটা (তথ্য) আমার অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। এটার জন্য সরকার আইন করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টাকে সম্প্রতি ঘটনাগুলো অবহিত করে আইনি বিষয়টি তুলে ধরি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মধ্যে একটি ধারা যুক্ত করে ডাটা সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। এতে করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা শুধু নয় ডাটা সিকিউরিটি এবং ডাটা প্রাইভেসি- সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া যাবে।
সম্প্রতি নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঘটনাটি বেশ আগে ঘটেছে। কেউ এটা নিয়ে রিপোর্ট করেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন বিষয়টি ছড়িয়েছে তখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী খুব দ্রুত অ্যাকশানে যেতে পেরেছে। এটা একটা ভালো দিক। আবার এই মাধ্যমটির অপব্যবহার করে অপরাধীরা বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। এই দুটো বিষয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, দুটি বিষয়েই সচেতন হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, যিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন তিনি আইনের দ্বারস্থ হন না বা যেতে চান না। তাদের আইনের কাছে যেতে হবে। রিপোর্ট করতে হবে। এ সচেতনতা সবার মধ্যে থাকতে হবে। কাউকে না জানালে তো আমরা জানতেই পারবো না এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আইনের কাছে যেতে পারেন। প্রচলিত আইনেও তিনি প্রতিকার পেতে পারেন।
মন্ত্রী মনে করেন, ব্যক্তির সব তথ্য (হাঁড়ির খবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া ঠিক নয়। অনিষ্টকারীরা হয়তো এই তথ্য নিয়েই অনিষ্টসাধন করতে পারে। তখন দেখা যায় ব্যক্তির তথ্য ব্যক্তির বিরুদ্ধেই কাজে লাগাচ্ছে অনিষ্টকারীরা। মানুষ নিজেই জানে না সে তাকে কিভাবে সুরক্ষা দেবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকলে অন্তত কিছু ঝামেলা এড়িয়ে চলা সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার সময় এ বিষয়ে সবাইকে তিনি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
ব্যক্তিগত কথা রেকর্ড, অডিও ফাঁসের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশনা আছে মোবাইল অপারেটরগুলোকে ৬ মাস কল রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাড়া সেই রেকর্ড অন্য কাউকে দেওয়া যাবে না। ফলে অপারেটরগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তিগত কথাবার্তা ফাঁস হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। কেউ কারও অজ্ঞাতে কথা রেকর্ড করে ফাঁস করে থাকতে পারে। তিনি মনে করেন, কারও কথা রেকর্ড করার আগে অন্তত তার অনুমতি নিতে হবে। তাহলে ব্যক্তির অন্তত জানা থাকলো, তার কথা রেকর্ড করা হচ্ছে বা হয়েছে। মোস্তাফা জব্বার জানান, টেলিযোগাযোগ আইন-২০১০ (সংশোধিত) আবারও সংশোধন করা হবে।