X
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
২৩ বৈশাখ ১৪৩২

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস আজ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ জুন ২০২১, ০০:০৩আপডেট : ০৭ জুন ২০২১, ০০:০৩

আজ ৭ জুন ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অনন্য একটি দিন। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৬ দফা ধীরে ধীরে বাঙালির অকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করে। রচিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা। ৬ দফাভিত্তিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। 

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু ৬ দফা সম্পর্কে বলেন, ছয় দফা জনগণের সামনে বাংলার মানুষের মুক্তির সনদ হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ঐতিহাসিক ছয় দফা বাঙালির মুক্তির পথ দেখিয়েছে, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই লক্ষে ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৬৬ পর্যন্ত কাজ করেছিলেন। বাঙালির মানস পরীক্ষা করতে ৬ দফার বীজ বপন করেছিলেন। ৬ দফাই স্বাধীনতার অভিযাত্রা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপরেখা ছিল ৬ দফা। তিনি আরো বলেন, ঐতিহাসিক ৬ দফাই মূলত আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬ দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে ৬ দফাকে স্থান দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।  সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর অনুরোধ উপেক্ষা করে ৬ দফার প্রতি আয়োজকপক্ষ গুরুত্ব না দিয়ে তা প্রত্যাখান করে। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ওই সম্মেলনে আর যোগ দেননি। তবে লাহোরে অবস্থানকালেই ৬ দফা উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু। 

এরমধ্য দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের খবরের কাগজে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা তকমা দিয়ে সংবাদ ছাপানো হয়। পরে বঙ্গবন্ধু ঢাকায় ফিরে ১৩ মার্চ ৬ দফা এবং  দলের অন্যান্য বিস্তারিত কর্মসূচি দলের কার্যনির্বাহী সংসদে পাস করিয়ে নেন।

৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শুরু হয় আওয়ামী লীগের  আন্দোলন। হরতালও ডাকা হয়। হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর গুলিবর্ষণ করে। এতে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, সফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন।

ক্রমেই ৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন তৈরি হয়। জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের। বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের নেতৃত্বাধীন স্বৈরাচারী সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালের ৭ জুন নতুন মাত্রা পায়।

৬ দফাভিত্তিক ১১ দফা আন্দোলনের পথপরিক্রমায় শুরু হয় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। সর্বোপরি ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে বাংলার জনগণ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের একচেটিয়া রায় প্রদান করেন। জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাকিস্তানি শাসকরা বিজয়ী দলকে সরকার গঠন করতে না দিলে বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

৬ দফার মূল বক্তব্য ছিল - প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দুটি পৃথক ও সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর ও শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকাসহ দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু করোনাভাইরাসের মহামারীতে সৃষ্ট সংকটের কারণে ঐতিহাসিক এই দিনটিতে ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে দিবসটির কর্মসূচি পালন করবে দলটি।

দলটির দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে - সোমবার সূর্যোদয়ের ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের সকল দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৯ টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

/পিএইচসি/এমএস/
সম্পর্কিত
শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক লিখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, এসিল্যান্ডকে অব্যাহতি
গাজীপুর সিটি করপোরেশনবঙ্গবন্ধুর মাগফিরাত কামনায় চিঠি দিয়ে সচিব ওএসডি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরখাস্ত
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীতে আ.লীগের ঝটিকা মিছিল
সর্বশেষ খবর
সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদগুলো কমানোর সিদ্ধান্ত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদগুলো কমানোর সিদ্ধান্ত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
নায়িকা বানানোর আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগ হিরো আলমের বিরুদ্ধে
নায়িকা বানানোর আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগ হিরো আলমের বিরুদ্ধে
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের পথে খালেদা জিয়া
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের পথে খালেদা জিয়া
শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর ও হুমকির অভিযোগ কলেজ ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে
শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর ও হুমকির অভিযোগ কলেজ ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জানাজা পড়ালেন ছেলে, প্রিয় আইনাঙ্গন থেকে শেষ বিদায়
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জানাজা পড়ালেন ছেলে, প্রিয় আইনাঙ্গন থেকে শেষ বিদায়
চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর
চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের চাপে আওয়ামীপন্থি ৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের চাপে আওয়ামীপন্থি ৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
স্বাস্থ্য ক্যাডার পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস করার সুপারিশ
স্বাস্থ্য ক্যাডার পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস করার সুপারিশ