মার্কিন সামরিক অনুদান কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হচ্ছে এ সম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মতিপত্র পাঠানোর জন্য নিজেদের মধ্যে আরও আলোচনা করতে চায় সরকার। এ কারণে সদ্যসমাপ্ত ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মতিপত্র পাঠায়নি বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এতে দেশের মধ্যে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আমাদের আরও সময় প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত সামরিক অনুদান কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হচ্ছে এ সম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা সব দেশের জন্য শনিবার থেকে শুরু হবে। অন্যান্য দেশের মতো এ সম্পর্কে একটি সম্মতিপত্র দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিলেও প্রক্রিয়াটি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে পারেনি সরকার।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর, ২০২১) এ বিষয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেছিলেন নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত বিষয়গুলো সম্মতিপত্রে উল্লেখ করবে সরকার।
সম্মতিপত্র পাঠানোর আগে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে অনুমোদন নিতে হবে বলে জানিয়েছে সরকারি একটি সূত্র। এ ছাড়া সম্মতিপত্রের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংও প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালের লিহেই আইনে সম্প্রতি সংশোধনী আনা হয়েছে এবং নতুন নিয়ম অনুযায়ী অনুদান প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে কোথায় এবং কীভাবে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তা জানাতে হবে। নতুন এই প্রক্রিয়া ১ জানুয়ারি, ২০২২ থেকে কার্যকর হচ্ছে।
এর আগে এ বিষয়ক সম্মতিপত্র দেওয়ার জন্য গত ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের কাছে একটি নোট ভার্বাল পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৫ সাল থেকে প্রায় সাড়ে সাত কোটি ডলার অনুদান পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে ফরেন মিলিটারি ফাইন্যান্সিং এবং আন্তর্জাতিক মিলিটারি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। ওই অর্থের একটি বড় অংশ বঙ্গোপসাগরে মার্কিন যে উদ্যোগ রয়েছে সেটি শক্তিশালী করার জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ২০১৩ ও ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটি হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজ দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য ৫০টি মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
২০০৫ থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি ডলার ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পাশাপাশি ২০১২ সালে ১৮ কোটি ডলার ব্যয়ে চারটি সি-১৩০ পরিবহন উড়োজাহাজ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।