ভারত সফরকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা লালন, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ও জীবনানন্দকে ভাগাভাগি করেছি। আমাদের ভাষায় মিল রয়েছে। আমরা পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি ভাগাভাগি করছি। সুন্দরবন আমাদের দুই দেশেরই গর্ব। এটা নিয়ে আমাদের কোনও বিরোধ নেই। তাহলে পানি বণ্টন নিয়ে কেন থাকবে?’
শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুতে ‘বন্ধুত্ব একটি বহমান নদী’ শীর্ষক এক কলামে একথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, দুই দেশের অনেক কিছুতে মিল।অনেকদিন ধরেই সাংস্কৃতিক বিনিময় চলছে। সুন্দরবনসহ পদ্মা, ব্রহ্মপুত্রও ভাগাভাগি করছে দুই দেশ। তাহলে তিস্তা করতে বিভেদ থাকবে কেন।
তিস্তার পানির স্বল্পতার কথা অবগত আছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী লিখেন, ‘দুই দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য আমাদের পানি বণ্টন করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমি শান্তিতে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসই শান্তি নিয়ে আসে। আমাদের মাঝে কিছু মতপার্থক্য আছে। তবে আমি বিশ্বাস করি শান্তিপূর্ণভাবে এর সমাধান সম্ভব। সীমান্তচুক্তির মাধ্যমে আমরা আমাদের ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েছি। তিস্তা চুক্তি নিয়েও কথা চলছে। আমি আশাবাদী, প্রতিবেশী দেশের মানুষ ও নেতাদের ওপর আমার আস্থা আছে।’
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের মধ্যদিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা এ সফরে যাচ্ছেন।
দু’দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আসন্ন এ সফর ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত এবং দু’দেশের নেতৃত্বের মধ্যে আস্থা ও বন্ধন শক্তিশালী হবে।
৮ এপ্রিল এখানে হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার পর একগুচ্ছ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। এসময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীর হিন্দি সংস্করণ উন্মোচন করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
বিকালে মহান মু্ক্তিযুদ্ধে শাহাদৎ বরণকারী ভারতীয় সৈনিকদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ৭ শহীদ ভারতীয় সেনা পরিবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননাপত্র প্রদান করবেন।
৯ এপ্রিল সকালে প্রধানমন্ত্রী আজমীর শরীফ যাবেন। সেখানে খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি (রহঃ)-এর দরগাহ শরীফ জিয়ারত করবেন। একইদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করবেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত এক নৈশভোজে যোগ দেবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
১০ এপ্রিল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের এক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন। বিকেলে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে দিল্লি ত্যাগ করবেন।
সূত্র: দ্য হিন্দু
/এমএইচ/
আরও পড়ুন:
দুদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবো: মোদি
মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গীদের সেলফি ঝড়!
ছবিতে পালাম বিমানমন্দরে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর: পানি নিয়ে ‘ঘোলা জল’ পরিস্থিতি