বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। দেশের এই খ্যাতনামা লেখকের ওপর হামলার পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণজাগরণমঞ্চ। বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। প্রত্যেকের চাওয়া, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ফিরে আসুন আবার তার লেখার জগতে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর আক্রমণের নিন্দা জানাই।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী লিখেছেন, ‘মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর আঘাত শুধু আঘাত নয়, জাতির বিবেকের প্রতি আঘাত। আসুন, পরিহার করি, আমাদের তথাকথিত সুশীলতা, পরিষ্কার করে বলি, ধর্মান্ধ শক্তি ধর্মের নামে অধর্মের কায়েমকারী। এরা আমাদের ডানপন্থ অবলম্বনকারী প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক শক্তির আঁচলের নিচে ঋষ্টপুষ্ট হচ্ছে। এই পরাজিত শক্তির দমন এবং নিধন চলতে থাকুক। যেই রাজনীতিবিদ খালেদা জিয়া বলে ছিলেন জঙ্গিরা জঙ্গি নয়, ধিক তাকে। ধ্বংস হোক এই নরকের কীটগুলো আর তাদের আশ্রয়দাতারা।’
এই শিক্ষকের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না লিখেছেন, ‘ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফেসবুকে লেখালেখি দেখে মনে হচ্ছে, ঘটনার তদন্তে গড়িমসি ও তালবাহানা করা হচ্ছে। এ রকম কোনও অপচেষ্টারও নিন্দা জানাচ্ছি।’
ড. মাসুদুজ্জামান তার ওয়ালে লিখেছেন, ‘মুহম্মদ জাফর ইকবাল শহীদের সন্তান। তার ওপর আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই।’
কবি ও সাংবাদিক মাহবুব আজীজ লিখেছেন, ‘আমি, এতদূর থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাসিমাখা মুখটা দেখতে পাই; যিনি অবাক বিস্ময়ে হাসতে হাসতে বলছেন, এভাবে মারলো? এভাবে মারলো? জানি, আমাদের হাসি কখনও কখনও সবচেয়ে গভীরতম কান্না হয়ে আসে। মুক্তবুদ্ধি আর মুক্কচিন্তার ওপর ছুরি হাতে ফালাফালা করে নেওয়ার ঘটনা...একের পর এক...হুমায়ুন আজাদ থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবাল....আমাদের সব বাতিঘর এভাবে রক্তাক্ত, ঘাড়ে-মুখে কোপ খেয়ে পড়ে থাকবে? আমরাও হাসতে হাসতে বলবো, এভাবে মারলো? এভাবে মারলো?’
সাংবাদিক রাজীব নূর লিখেছেন, ‘জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ’।
রাজনৈতিক কর্মী বাকি বিল্লাহ লিখেছেন, ‘ধিক্কার জানাই এই আক্রমণের। বেঁচে থাকুন জাফর ইকবাল।
অভিনেত্রী বন্যা মির্জা তার ফেসবুক ওয়ালে দিয়েছেন, ‘যা ইচ্ছে তাই অনুভূতি।’
সাংবাদিক হাসান শান্তনু লিখেছেন, ‘প্রিয় বাংলাদেশ, রাষ্ট্র হিসেবে তোমার চরিত্রকে পুরোপুরি মধ্যযুগীয় বলে চিহ্নিত করতে বর্বরতার ধারাবাহিকতা চলছে। এবার রুখে দাঁড়াও, গর্জে ওঠো।’
আরিফুল ইসলাম ডালিম লিখেছেন, ‘হামলাকারীরা কোনও দলের কোনও মতেই এটা মুখ্য বিষয় নয়। আমরা চাই, কারা হামলা চালালো, নেপথ্যের মদতদাতা কারা, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার। এই হামলা নিয়ে অন্তত যেন কোনও রাজনীতি না হয়।’
চিত্রনায়িকা অধরা খান লিখেছেন, ‘ফিরে আসুন চেতনার বাতিঘর। আমাদের প্রিয় ড. জাফর ইকবাল স্যার। আপনি আমাদের মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্রিয়স্বর।’
সাংবাদিক আসাদ রহমান তার ওয়ালে লিখেছেন, ‘ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীকে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আপাতত ওকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার নয়, হামলার পেছনে কারা, সেই রহস্য উদ্ঘাটন করা হোক।’
সাংবাদিক তাওহিদ হায়দার খান লিখেন, ‘জাফর ইকবাল স্যার, আপনি ক্ষমা করবেন না। মমতা দেখাবেন না। প্রতিশোধস্পৃহা নিয়ে ফিরে আসুন।’
ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সোহেল প্রশ্ন তোলেছেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে আবার কি কালো জাদু শুরু হয়ে গেলো!’
সঙ্গীতশিল্পী অরুপ রাহী লিখেছেন, ‘জাফর ইকবালের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। সঠিক তদন্ত ও দোষীদের বিচার নাই।’
তরুণ সাংবাদিক দেলোয়ার মহিন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে একজন জাফর ইকবালের খুব বেশি দরকার। আপনি সুস্থ হয়ে দ্রুত ফিরে আসুন স্যার।’
এ রিপোর্ট লেখার সময় জাফর ইকবালের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল। আগামীকাল রবিবার শাহবাগে তার ওপর হামলার প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে।