X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

নুসরাত হত্যার বিচার দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১১ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৩৭আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০১৯, ০৪:৩৮
image

রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চার শিক্ষার্থী ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনার বিচার চেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  (ঢাবি) চার শিক্ষার্থী। বুধবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে তাদের প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা ছিল।

ওইসব স্লোগানে লেখা ছিল– ‘যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই’, ‘বোন নুসরাতকে হত্যার বিচার চাই’, ‘অধ্যক্ষসহ জড়িতদের ফাঁসি চাই’, ‘যৌন নিপীড়ন থামবে কবে’, ‘রক্ষক যখন ভক্ষক হয় আমাদের আস্থা কোথায়’, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদকারীকে হত্যা কেন’,  ‘অন্যায়ের প্রতিবাদের ফল কি মৃত্যু? কাল কার মৃত্যুর পালা? আমার বোনের?’  ইত্যাদি।

প্রতিবাদ জানানো চার শিক্ষার্থী হলেন– ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আজিজুর রহমান, ইউএসওএল বিভাগের মাহমুদুল্লাহ সিয়াম, ইসলামিক ইতিহাস বিভাগের সাজ্জাদ কাদির, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান খান।

প্রতিবাদী শিক্ষার্থী রায়হান খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনা শোনার পর আমরা এই কয়জন তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানাতে এখানে দাঁড়িয়েছি। এরকম যেন আর কোনও বোনের মৃত্যু না হয়।’

মাহমুদুল্লাহ সিয়াম বলেন,  ‘মাদ্রাসা শিক্ষকের কাছে ছাত্রী নিরাপদ না! এ বিষয়ে আমরা সমাজের প্রতিক্রিয়া জানতে চাই। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তেমন কোনও প্রতিবাদ দেখা যায়নি। আমাদের সবার এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো উচিত।’

প্রসঙ্গত, ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় নুসরাত বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান।

গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে বোরকা পরা ৪-৫ ব্যক্তি তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রী সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরছান্দিয়া গ্রামের মাওলানা একেএম মানিকের মেয়ে। অভিযোগ আছে, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা এর আগে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে। এ কারণে গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেয়েটির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা বর্তমানে ফেনী কারাগারে আছেন।

এদিকে, সোমবার (৮ এপ্রিল) দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তার সর্বশেষ স্বাস্থ্যের অবস্থা জানিয়ে কাগজপত্র পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে সেখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন ডা. সামন্তলাল সেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মেয়েটির শারীরিক যে অবস্থা তাতে পাঁচ ঘণ্টা ফ্লাই করা খুবই রিস্কি বলে মনে করছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাই এই মুহূর্তে মেয়েটিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব না।’

 

আরও খবর: 

বাঁচানো গেলো না নুসরাতকে

নুসরাতকে বাঁচাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি: মেডিক্যাল বোর্ড প্রধান


নুসরাতের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ফিডব্যাক এলে দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের

লাইফ সাপোর্টে ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী

ফেনীর সেই মাদ্রাসাছাত্রী শঙ্কামুক্ত নয়

ফেনীর সেই মাদ্রাসাছাত্রীর চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড

মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা: ‘অগ্নিসংযোগকারীদের পরনে ছিল বোরকা, হাতমোজা ও কালো চশমা’

পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

 

 
/এসও/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বৃষ্টিতেই কাটলো ওয়াসার পানির সংকট
বৃষ্টিতেই কাটলো ওয়াসার পানির সংকট
টিভিতে আজকের খেলা (৭ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৭ মে, ২০২৪)
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস