বঙ্গবন্ধু নদীপদকের জন্য জাতীয় পর্যায়ে আটটি এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ১৫টি আবেদনপত্র পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে তিনটি এবং বিভাগীয় পর্যায়ে আটটি পদক প্রদান করা হবে। উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না গেলে পদকের সংখ্যা কম হতে পারে। প্রাপ্ত আবদনপত্র থেকে যোগ্য প্রার্থীর কার্যক্রম যাচাইয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে দু’জন করে কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করবেন। তারা তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করবেন। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বঙ্গবন্ধু নদীপদক প্রদানের জন্য জাতীয় মনোনয়ন কমিটির এক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু নদীপদক প্রদান জাতীয় মনোনয়ন কমিটির উপদেষ্টা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মনোনয়ন কমিটির সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
যেসব বিষয়ে অবদানের জন্য এই পদক দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো হলো—দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, দখল রোধ, শিল্পকারখানার বর্জ্য দূষণ রোধ, পরিবেশ দূষণ রোধ, নদীর তীর ও অভ্যন্তরে অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণসহ নদী ভরাট রোধ, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রক্ষার কাজে সহায়তা দান, নদীকে নৌচলাচলের উপযোগী করে বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং নদীকে দূষণ ও অবৈধ দখল-ভরাটমুক্ত করা। গুরুত্বপূর্ণ এসব অবদানের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে প্রথমবারের মতো এই পদক দেওয়া হবে।
সভায় জানানো হয়, নদী রক্ষায় ‘বঙ্গবন্ধু নদীপদক’ হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, নগদ পঁচাত্তর হাজার টাকা ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮ ক্যারেট মানের ৩০ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
পদক প্রদান সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুসারে, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরে কিংবা সুবিধামতো সময়ে ‘বিশ্ব নৌদিবস’র দিন পদক প্রদান করা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পুরস্কারের সংখ্যা ও মূল্যমান বাস্তবতার নিরিখে পরিবর্তন করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বঙ্গবন্ধু নদীপদক নীতিমালা-২০১৯’ অনুমোদন করেছেন।
প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা (আইএমও) সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক পরিবেশ, নৌযানের নিরাপত্তা এবং চলাচলের পথ সুগম করার লক্ষ্যে ‘বিশ্ব নৌদিবস’ উদযাপন করে। আইএমও’র উদ্যোগে এ বছর ২৬ সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ পালনের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। নদী ও সমুদ্র সুরক্ষা, দূষণ রোধ ও নৌচলাচলের পথ সুগম করার লক্ষ্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘নৌ পেশায় দক্ষ নারী, সবাই মিলে দেশ গড়ি’—এই প্রতিপাদ্যে এ বছর ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। নৌ দিবসে ‘বঙ্গবন্ধু নদীপদক’ প্রবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
