দ্বন্দ্বপূর্ণ পরিবেশে নারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ২০০০ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ রেজুলেশন গ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এর ১৯ বছর পরে রবিবার (২৪ নভেম্বর) প্রথমবারের মতো এটি বাস্তবায়নের জন্য তিন বছর মেয়াদি জাতীয় অ্যাকশন পরিকল্পনা ঘোষণা করলো সরকার।
স্থানীয় একটি হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউএন ওমেন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়।
এই জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রেক্ষাপটের পেছনে পাঁচটি কারণ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে– ১৯৭১ সালে বাংলাদেশি নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন; প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় নারীদের ভূমিকা; শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নারীদের যোগদান; নারীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন প্রতিরোধ করে তাদের ক্ষমতায়ন এবং রোহিঙ্গা নারীদের নির্যাতন।
১১ সরকারি এবং দুটি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট সময়ে ২৮টি কার্যক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত থাকবেন।
নারীদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, অংশগ্রহণ এবং সুরক্ষা দেওয়া– এই তিনটি বড় পিলারের অধীনে এই ২৮টি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সময়, অর্থ এবং কোন মন্ত্রণলয় কী ও কীভাবে করবে সেটির বিস্তারিত বর্ণনা আছে এই অ্যাকশন পরিকল্পনায়।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আমরা কোনও বিষয়কে হুমকির প্রেক্ষাপট থেকে না দেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’ এটি একটি অত্যন্ত কঠিন একটি ব্যাপার বলে অভিহিত করেন তিনি।
১৮০০ শতকের নিরাপত্তা প্রেক্ষাপট এবং বর্তমান যুগের নিরাপত্তা প্রেক্ষাপট ভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সবাইকে যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যখন মন্ত্রণালয়ে যোগ দিই তখন হাতেগোনা কয়েকজন নারী অফিসার ছিলেন। কিন্তু এখন মোট কর্মকর্তার ৪০ শতাংশ নারী।’
অনুষ্ঠানে নারী ও শিশু বিষয়ক সচিব কামরুন নাহার, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার মোহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জাতিসংঘ অনু বিভাগের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান, ইউএন ওমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সোকো ইসিকাওয়াসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।