গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে ইঙ্গিত করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, সংবিধান বিশেষজ্ঞের লিংক অব চেইন জামায়াতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যখন দেখি জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে তিনি ২০ দলীয় জোটের ঐক্যের নেতা সাজেন; তখন বুঝি কোন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তিনি বিশ্বাস করেন। উনার চেইন জামায়াতের সঙ্গে। কথাগুলো পরিষ্কার করে বলতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির জামিনের পক্ষে নামার ঘোষণা দেন যখন একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ; তখন বোঝা যায় তিনি কীসের সুশাসন চান। তিনি চান দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সামনে আসুক।’
নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী হওয়ার কোনও সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাইতে গেলে যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, তাদের নিয়ে স্পষ্ট কথা বলতে হবে। এখানে নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। আমি অবাক হই যখন রাতে টেলিভিশনে টকশোতে দেখি রাজনীতিবিদরা ইনিয়ে-বিনিয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষে কথা বলেন। যারা সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিল, তাদের পক্ষে কথা বলেন। অবাক হই! কোন সমাজে বাস করছি। এভাবে রাষ্ট্র চলতে পারে না।’
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে অনেক চেষ্টা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলো; অনেক বুদ্ধিজীবী বললেন, বিচারে না যেতে। তাদের শেকড় নাকি অনেক দূরে বিস্তৃত—দেশের বাইরে। শেখ হাসিনা বললেন— বঙ্গবন্ধু আইন করেছিলেন, আমি বিচার সম্পন্ন করবো। এটা আমার কমিটমেন্ট।’ তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন ফোন করে কাদের মোল্লার ফাঁসি স্থগিত করতে বলেছিলেন।শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দেখবো। একদিনও দেরি করেননি, ফাঁসি কার্যকর করেছেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, একাত্তরে তোমরা বিরোধিতা করেছ, এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে না করছ, তোমাদের সঙ্গে আমাদের আপস হতে পারে না।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘দুর্গাপূজার সময় আমাদের দেশে একটা মন্দিরও আক্রান্ত হয় না, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান আক্রান্ত হয় না, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা গির্জায় নিরাপদ থাকে। সম্প্রীতির বাংলাদেশ চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন তিনি বিমান থেকে নেমে বাংলার এক মুঠো মাটি হাতে নিয়ে বলেছিলেন, বাঙালির এই ভালোবাসা আমি বুকের রক্ত দিয়ে শোধ করে যাবো। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি শুধু একা নন, গোটা পরিবার রক্ত দিয়ে ভালোবাসার ঋণ শোধ করে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংগঠনের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাব সপ্নীল প্রমুখ।
