ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন এবং এর জের ধরে সৃষ্ট বিতর্কের ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন। সীমান্তে উদ্বেগজনক কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে মনে করে বাংলাদেশ সরকার। একে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক ভারতের ঘরোয়া রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, ভারত সরকার তাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে তাদের দৃঢ় পারস্পরিক বিশ্বাস, সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়ার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেবে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) ইস্যুকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় মনে করে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এনআরসি ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর কোনও অযাচিত প্রভাব পড়বে না, সে নিশ্চয়তা ভারত সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী—বিজিবি সীমান্তসংক্রান্ত অপরাধসহ যেকোনও ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। উদ্বেগজনক কোনও পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
‘পার্বত্য এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে সরকার অত্যন্ত কঠোর’
বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৪টি আঞ্চলিক সংগঠন এবং তাদের নিজস্ব সশস্ত্র গ্রুপের সহস্রাধিক সদস্য রয়েছে। এই গ্রুপগুলো পার্বত্য এলাকায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা, চাঁদাবাজি, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও মতবিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দ্বিমুখী এবং কখনও ত্রিমুখী সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাহাড়ি এলাকায় স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।