X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগে স্বীকৃতি তারপর অন্যকিছু, পাকিস্তানকে বঙ্গবন্ধু

উদিসা ইসলাম
২২ মার্চ ২০২০, ১১:৫৯আপডেট : ২২ মার্চ ২০২০, ১২:০৭

১৯৭২ সালে ২৩ মার্চের পত্রিকা পাকিস্তানকে বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তারপরে অন্যকোনও আলাপ হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা বলেন। এর আগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো এক বক্তৃতায় তাকে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানান। এরপর বঙ্গবন্ধু এসব কথা বলেন। এদিকে সোভিয়েত প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম ও খুলনায় জাহাজ পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।

বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলতে চান না। তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর আলাপের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘আগে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তারপর তার সঙ্গে আলোচনা হবে। আমরা কী করবো বা করবো না সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। হাওয়ায় ওড়ানো এই ধরনের কথাবার্তা দিয়ে কোনও সমস্যা সমাধান করা যাবে না। তাকে অবশ্যই বাস্তবতা স্বীকার করে নিতে হবে আগে। তারপর একটা পথ বের হতে পারে।’

এর আগে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় প্রধানমন্ত্রী জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করে যাওয়ার সংকল্প ঘোষণা করে বলেন যে, জাতীয় স্থিতিশীলতা ও স্বাধীনতাকে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি উদ্ধার কাজে জোট নিরপেক্ষতা একটি প্রত্যক্ষ ও গঠনমূলক ভূমিকা নিয়েছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে দুই দেশের সহযোগিতা জোরদার করতে উভয় সরকারের পররাষ্ট্র ও দেশরক্ষা দফতর, পরিকল্পনা পরিষদ এবং অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক ও কারিগরি বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। তারা উপমহাদেশের শান্তি বিষয়ে একমত হন। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়েও কথা বলেন তিনি।

ফলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান যদি এই উপমহাদেশে শান্তি চায় তাহলে তাদের মানসিকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। এই উপমহাদেশে অবশ্যই একটি স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এটা তখনই সম্ভব যখন সবাই বাস্তবতাকে মেনে নেবে। আপনারা আমাদের বাণিজ্য, চুক্তি এবং ঘোষণা থেকে নিশ্চিত হতে পারবেন যে, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েছে তার বেশি আমি কিছু বলতে চাই না।’

১৯৭২ সালে ২৩ মার্চের পত্রিকা

সোভিয়েতের প্রতিনিধি দল ও বঙ্গবন্ধু

সোভিয়েত সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার অফিশিয়াল বাসভবনে বুধবার সন্ধ্যায় দেখা করেন। প্রতিনিধি দল ৪৫ মিনিট আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। তাকে সেখানে বাংলাদেশে সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত পরামর্শ দেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদকে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয় যে, তৎপরতার জন্য চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৩০ মার্চের ভেতর কাজ শুরু করবে। এ তৎপরতায় যে জাহাজ যুক্ত হওয়ার কথা সেটি ৩০ মার্চ এর ভেতর পৌঁছাবে এবং চট্টগ্রামের এই কার্যক্রম অতি অল্প সময়ের ভেতর সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

রাজনীতি না প্রশ্নটা মানবতার

ত্রাণ তৎপরতা বিষয়ে অন্যান্য দেশের ধীরগতি কথা জিজ্ঞেস করা হলে অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে (এপি)বলেন যদি কেউ মনে করে যে বাংলাদেশকে তাদের মতো করে পরিচিত হতে হবে, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। এটা কোনও রাজনীতির প্রশ্ন না এটা মানবতার প্রশ্ন। এইটা কোনও সহজ সমস্যা না কিন্তু আমাদের কিছু বিষয় থাকতে হবে। ভারত থেকে লাখ লাখ শরণার্থীরা ফিরে এসেছে, আমরা তাদেরকে কিছু আবাসন ও খাদ্যের ব্যবস্থা করেছি। মাত্র ২ মাসের ভেতরে তাদেরকে অনেক কিছু দিয়ে ফেলতে পারবো এটা আপনারা আশা করতে পারেন না। আমার আত্মবিশ্বাস আছে যে, তারা বেঁচে থাকবে তারা থাকবে। তারা ভুগবে কিন্তু টিকে যাবে। যারা আমাদেরকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে তারা অন্যদের থেকে ভালো বন্ধু হিসেবে আমাদের কাছে বিবেচিত হবে।

তিনি বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া অন্য অনেক দেশের থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন ভালো। এমনকি এটি নিউ ইয়র্ক থেকেও ভালো। আপনি সড়কপথে ময়মনসিংহ জান কেউ আপনাকে আঘাত করবে না, নিউ ইয়র্ক শহরে আপনি সেটা পারবেন কিনা ভেবে দেখেন।’

১৯৭২ সালে ২৩ মার্চের পত্রিকা

২৬ মার্চ অর্থনৈতিক নীতি ঘোষণা

বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক নীতি বিষয়ক ঘোষণা দেবেন বলে জানানো হয়। যা দেশের সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে বিশ্লেষকরা আশা করছেন বলে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ বাসসকে এ তথ্য দেন।

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে একটি আলাদা জায়গা আছে। বঙ্গবন্ধু কৃষক ও শ্রমিক বান্ধব বাংলাদেশ কায়েম করতে চায়। চাইলে বঙ্গবন্ধু জাতির জনক হিসেবে একটি শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারতেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কঠোর পরিশ্রম করছেন। বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা মেটাতে এবং একটি একটি সোনার বাংলা তৈরি করতে তিনি বদ্ধ পরিকর।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, এত রকমের সংযুক্ত তার সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রতি রবিবার জনগণের সঙ্গে তাদের জীবনের সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন। এমনকি তিনি শুক্রবার ৫-৭ সাতটা পর্যন্ত জনগণের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।

 

 

/ইউআই/এসটি/
সম্পর্কিত
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
রাহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’, ভিডিও করলেন মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে কাল নাগরিক সভা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে কাল নাগরিক সভা
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!