X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ মে ২০২০, ১৫:০৮আপডেট : ১৯ মে ২০২০, ১৫:৪০

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসির বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা) অবশেষে সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) গ্রহণ করেছে। ১ হাজার ৫৮৪টি প্রকল্পের জন্য এই অর্থ ধরা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় মঙ্গলবার (১৯ মে) নতুন এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ।

করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সভায় যোগ দিয়েছেন এবং সভায় সভাপতিত্ব করেছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা ছিলেন শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে।

জানা গেছে, মূল এডিপি ছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের প্রায় ৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকায় এডিপিও অনুমোদন করেছে এনইসি। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসহ সরকারের এডিপি’র সর্বমোট আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকা প্রায়।

দারিদ্র্য নিরসন ও জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্য সামনে রেখে সরকার প্রতিবারের মতো এ বছরও দেশজ সম্পদ, বৈদেশিক অর্থায়ন ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এডিপি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসির বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)

এডিপি’র সফল বাস্তবায়ন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ।

সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি), পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এবারের এডিপিতে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া ১০টি খাত হচ্ছে—১. পরিবহন, ২. অবকাঠামো, পানি ও গণপূর্ত, ৩. বিদ্যুৎ, ৪, শিক্ষা ও ধর্ম, ৫. বিজ্ঞান, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, ৬. পল্লি উন্নয়ন ও পল্লি প্রতিষ্ঠান, ৭. স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ, ৮. কৃষি, ৯. পানিসম্পদ, ১০. জনপ্রশাসন। যা মোট এডিপি’র ৯৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতসহ সরকারের চলমান ৭ মেগা প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এবারের এডিপি। আর সেভাবেই তৈরি হবে সরকারের নতুন অর্থবছরের বাজেট। আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে ১২ মে পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন এডিপিতে ১০টি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে পরিবহন খাতে (সড়ক ও সেতু মিলিয়ে) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। যা চারভাগের এক ভাগেরও বেশি। অবকাঠামো, পানি সরবরাহ ও গণপূর্ত খাতকে দ্বিতীয় গুরুত্ব দিয়ে এই খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এর পরেই রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে ২৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। চতুর্থ স্থানে রয়েছে শিক্ষা ও ধর্ম। এ খাতে বরাদ্দ ২৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ।

বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে মোট বরাদ্দ ১৮ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। পল্লি উন্নয়ন ও পল্লি প্রতিষ্ঠান খাতে বরাদ্দ ১৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় খাতে বরাদ্দ ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কৃষি খাতে বরাদ্দ ৮ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৪ দশমিক ০৯ শতাংশ। পানিসম্পদ খাতে বরাদ্দ ৫ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জনপ্রশাসন খাতে বরাদ্দ ৪ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা  মোট বাজেটের ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

সরকারের চলমান সাত মেগা মগা প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা। মেট্রোরেল প্রকল্পে বরাদ্দ ৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। মহেশখালী মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে বরাদ্দ ৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। পয়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে ৩৫০ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে বরাদ্দ ১৫০০ কোটি টাকা।

এদিকে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বরাদ্দ পেয়েছে ৩১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর পরেই রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বরাদ্দ পেয়েছে ২৪ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ২৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ১৭ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ১২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ১০ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ৯ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ৯ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। সেতু বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ৭ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ৬ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা।

/এসআই/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডিসি ও এসপিদের
উপজেলা নির্বাচনমন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডিসি ও এসপিদের
জিম্মিদের মুক্তির জন্য হামাসকে ১৮ দেশের আহ্বান
জিম্মিদের মুক্তির জন্য হামাসকে ১৮ দেশের আহ্বান
অডিও ফাঁস, নারীর কাছে ডিবি পুলিশ সদস্যের ‘হেরোইন বিক্রি’
অডিও ফাঁস, নারীর কাছে ডিবি পুলিশ সদস্যের ‘হেরোইন বিক্রি’
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা