বঙ্গবন্ধুকে বর্ণনা করতে গেলে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর উক্তি সবার আগে মনে পড়বে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, তার সিদ্ধান্ত, অবিচলতা নিয়ে বলতে গিয়ে ক্যাস্ট্রো বলেন,‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় তিনি হিমালয়ের মতো’।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যার হাত দিয়ে গড়ে উঠেছে,যার কণ্ঠদীপ্ত আহ্বানেই অস্ত্রহীন মানুষও যুদ্ধে নেমেছে, সেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের প্রায় পুরোটা সময় কেটেছে সংগ্রাম ও আন্দোলনের মধ্যদিয়ে। রাজনৈতিক জীবনে যেমন তিনি অর্জন করেছেন শীর্ষ সাফল্য,রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দেশের মানুষের মনে একজনই ঠাই করে নিয়েছেন,তিনি বঙ্গবন্ধু।
ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট (১৯৭২ সালের এক সাক্ষাৎকারে) বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আপনার শক্তি কোথায়?' বঙ্গবন্ধু সে প্রশ্নের উত্তরে বলেন,‘আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি ৷' ‘আর আপনার দুর্বল দিকটা কী?''বঙ্গবন্ধুর উত্তর,‘আমি আমার জনগণকে খুব বেশি ভালোবাসি৷' যে মানুষ এ কথা বলতে পারেন তিনি যুগে যুগে জন্মান না। আর জন্মান না বলেই ১৯৭১ সালে স্বনামধন্য বিদেশি সংবাদ মাধ্যম নিউজউইক শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনীতির কবি’ উপাধি দেয়। আর বিবিসি জরিপে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি, মানুষেরই ভোটে।
আজ তার জন্মদিন। অবিভক্ত ভারত থেকে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮ বছর তিনি আন্দোলন করেছেন শোষণ,বৈষ্যম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোষহীন। যেখানেই শোষণ ও বৈষম্য সেখানেই অধিকার বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এ কারণে নদীবেষ্টিত গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেও তিনি হয়ে উঠেছেন এ উপমহাদেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদের একজন।