X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের উপকমিটিতে থাকা নিয়ে যা বললেন চার উপাচার্য

রশিদ আল রুহানী
১০ অক্টোবর ২০১৭, ২৩:৩৫আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০১৭, ০০:২৫

চার উপাচার্য আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ-বিষয়ক উপকমিটির খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে সরকারি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের। তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন অর রশিদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান খান। 

এছাড়া, ৪৯ সদস্যের এই কমিটির খসড়া তালিকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ১১ জন শিক্ষকের নাম রয়েছে। এখনও চূড়ান্ত না হওয়া তালিকাটি মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) গণমাধ্যমের হাতে আসে।

এরপর তালিকায় নাম থাকা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলেন এই চার উপাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব মানে অনেক বড় গুরুদায়িত্ব। এখানে এত কাজের চাপে আমি ওই কমিটিতে হয়ত থাকব না। আমি রাজিও ছিলাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে এ বিষয়ে কোনও বাধা নেই। তবে এটা ঠিক, রাজনীতি দেশকে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। সেখানে আমাদেরও অবদান থাকা প্রয়োজন। তবুও আমার হয়ত থাকা হবে না। তাছাড়া, এটা কেবল খসড়া কপি হয়েছে। চুড়ান্ত হোক, তখন দেখা যাবে।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘১৯৯২ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দলীয় কমিটিতে আমি ছিলাম। আবার ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্তও একটি কমিটির সদস্য ছিলাম। একসময় সরাসরি সংগঠনের পলিটিক্সও করেছি। সুতরাং, এই অর্থে এটা কিছু নয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচন আমি নিজে পরিচালনা করেছি। তখন তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ছিলাম। তখন অবশ্য কোনও কমিটিতে ছিলাম না। থাকলেও তেমন কার্যকর ছিল না ওইসব কমিটি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের সঙ্গে শিক্ষিত সমাজকে যুক্ত করা মানেই দেশের উন্নয়নে কাজ করতে দেওয়া বা কাজ করার সুযোগ তৈরি করা। শিক্ষিত সমাজ তার নিজস্ব স্থান থেকে দেশের উন্নয়নে কাজ তো করছেই, সেই সঙ্গে রাজনীতির মাধ্যমেও উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। অন্যদিকে, শিক্ষিত মানুষ রাজনীতিতে না আসা মানেই নিষ্ক্রিয় মানুষ দ্বারা শাসিত হওয়া। আমি মনে করি শিক্ষিত সমাজকে রাজনীতিতে আনা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষক-উপাচার্যরা বহু বছর ধরেই দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বা রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রেও তাদের রাজনীতি করার বিষয়ে কোনও বাধা নেই। উপরন্তু, শিক্ষিত মানুষকে তার ব্যক্তিত্ব ও জানার পরিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজনীতির এমন একটি মর্যাদা বা স্থান দেওয়া উচিত, যেখানে তারা তাদের দক্ষতা ও জ্ঞান দিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য অবদান রাখবেন।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একটি খসড়া কমিটিতে আমাকে রাখা হয়েছে–এমন একটি খবর আমি দেখেছি। কিন্তু এখনও যেহেতু এটি চূড়ান্ত হয়নি, তাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না শেষ পর্যন্ত রাখবে কি না। তবে রাজনৈতিক দলের কোনও কমিটির সদস্য হতে পারব না– বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এমন কোনও বাধা নেই। এছাড়া, এখনও যেহেতু কমিটি চূড়ান্ত হয়নি, সেহেতু আমার এ বিষয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপাচার্যরা দলীয় কমিটির সদস্য হতেই পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ’৭৩ এর অধ্যাদেশ ও আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রেও এর অনুমোদন রয়েছে। কেবল কেউ যদি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তাহলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। এছাড়া, এটা যেহেতু শিক্ষা ও মানবসম্পদ কমিটি অর্থাৎ, এটা তো আমাদের সমমনা একটি কমিটি। ফলে এখানে আমরা থাকতেই পারি।’

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটির একটি খসড়া তালিকা গণমাধ্যমের হাতে আসে।  যেখানে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক ও সদস্য সচিব আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন নাহার (চাঁপা)। চার জন বর্তমান উপাচার্য ছাড়াও খসড়া তালিকা অনুযায়ী এ কমিটিতে সদস্যপদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় জন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার জন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া, কমিটিতে সাবেক অধ্যাপক, ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ও নেতারা স্থান পেয়েছেন।

 

 

/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ: এস জয়শঙ্কর
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ: এস জয়শঙ্কর
প্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী
উপজেলা নির্বাচনপ্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী
আপাতত মেনশন নয়, আপিল বিভাগে সিরিয়াল অনুযায়ী চলবে মামলার শুনানি
আপাতত মেনশন নয়, আপিল বিভাগে সিরিয়াল অনুযায়ী চলবে মামলার শুনানি
ধূসর ছবির ঝকঝকে প্রিন্ট!
ধূসর ছবির ঝকঝকে প্রিন্ট!
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?