বাংলাদেশ থেকে নতুন পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কারাম এশিয়া। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) মালয়েশিয়ায় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় সংস্থাটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন পদ্ধতিতে শ্রমিক নিয়োগে ৩০-৩১ মে মালয়েশিয়ায় দুই দেশের মধ্যে জয়েন্ট টেকনিক্যাল মিটিং হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, স্বচ্ছ একটি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সুশীল সমাজের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি, যা অত্যন্ত উদ্বেগের।
যেহেতু মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, আমরা মনে করি আগের অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মূল উৎপাটন করাও জরুরি। কারাম এশিয়া এবং এর সদস্য সংস্থা তেনগানিটা ও নর্থ সাউথ ইনিশিয়েটিভ যেহেতু অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে খুব কাছে থেকে কাজ করে তাই আমরা জানি, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার কিছু এজেন্ট এবং দালালের কারণে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। মালয়েশিয়ায় এই মুহূর্তে ৬০ লাখ অভিবাসী কর্মী রয়েছে, এর মধ্যে ১০ লাখ বাংলাদেশি প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। অভিবাসী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে এবং তারা সহজ একটি টার্গেটে পরিণত হয়। এমনকি বৈধ অভিবাসী শ্রমিকরাও নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকারকে নতুন এই পদ্ধতির বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগী এবং রিক্রুটিং এজেন্টের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ ব্যবস্থা দূর করে দুই দেশের সরকারকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে যুক্ত হতে হবে। এতে যেমন শ্রমিকদের চাকরি নিশ্চিত হবে তেমনি শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ হবে। এটি পরিষ্কার যে, দুই দেশের নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের চাকরির চাহিদার সুযোগকে ভিন্নভাবে কাজে লাগাতে চায়।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে আছে – প্ল্যান অব অ্যাকশন তৈরির ক্ষেত্রে তৃণমূল এবং কমিউনিটি পর্যায়ে আলোচনা করতে হবে। শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দালালদের বাদ দিতে হবে এবং সরকারি পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। সমঝোতা না করে দুই দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে হবে। শ্রম পরিদর্শনের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রতারণার শিকার হয়ে অবৈধ হয়ে যাওয়া শ্রমিককে অন্য কর্মস্থলে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। একটি যথাযথ নীতিমালা প্রয়োজন যার মাধ্যমে শ্রমিক পাচার ও আধুনিক দাসত্ব বন্ধ করা যায়। শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় শূন্য অভিবাসন খরচ নিশ্চিতে দুই দেশকে কাজ করতে হবে। নতুন নিয়োগের আগে অবৈধ হয়ে পড়া শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে হবে। শ্রমিকদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।