X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদি আরব থেকে দুই সপ্তাহে ফিরেছেন দেড় হাজার কর্মী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৫৩আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৫৫

বিমানবন্দরে সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা কয়েকজন কর্মী

সৌদি সরকারের ‘নেশন উইদাউট ভায়োলেশন’ প্রোগ্রামের আওতায় চলমান ধরপাকড়ের মুখে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে ফিরেছেন প্রায় দেড় হাজার কর্মী। এর মধ্যে বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে ফিরেছেন ২১৫ জন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে এক হাজার ৫৬১ জন কর্মী দেশে ফিরেছেন। আর চলতি বছরে সৌদি আরব থেকে মোট ২১ হাজার বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন।

প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে ৮৬ জন ও রাত ১টা ১৫ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০২  ফ্লাইটে ১২৯ জন বাংলাদেশি ফেরত আসেন। ফেরত আসা কর্মীদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ফিরে আসা কর্মী‌দের অভি‌যোগ— সৌদি আরবে বেশ কিছুদিন ধ‌রে ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। সেই অভিযানে বাদ যাচ্ছেন না বৈধ আকামাধারীরাও (কাজের অনুমতিপত্র)। ফেরত আসা অনেক কর্মীর অভিযোগ— কর্মস্থল থেকে  আবাসিক রুমে ফেরার পথে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। সেসময় নিয়োগ কর্তাকে ফোন করা হলেও তারা দায়িত্ব নেননি। বরং আকামা থাকা সত্ত্বেও কর্মীদেরকে ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়া, দীর্ঘদিন অবৈধভাবে থাকার কারণেও অনে‌ককে আটক ক‌রে ফেরত পাঠা‌নো হচ্ছে।

বুধবার রাতে ফেরত আসা কর্মীদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের সোহরাব জানান, তিনি মাথায় জড়ানো মাফলার ছাড়া কিছুই আনতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলাম। কিন্তু ধরপাকড়ে সব স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। তার অভিযোগ, রুম থেকে ধরে নিয়ে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’

সাড়ে ছয় লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব গিয়েছিলেন গাজীপুরের হারুন। তিনি জানান, একটি নির্মাণাধীন কোম্পানিতে কাজ করতেন। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে ধরপাকড়ের শিকার হয়ে তাকে দেশে ফিরতে হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলার শাহবুল ইসলাম জানান, বিদেশ যাবার আগে দেশে তিনি গাড়ি চালাতেন। দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্সির প্রলোভনে পড়ে চার মাস আগে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু চার মাসে কোনও বেতন পাননি। এখন ধরপাকড়ের শিকার হয়ে শুন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো।

সিলেটের কামাল আহমেদ, টাঙ্গাইলের মো. জাহেদ আলী, গাজীপুরের ইমরান, কুমিল্লার ইব্রাহিম,নরসিংদীর বাবুলসহ আরও অনেকেই জানালেন, তারা তাদের খরচের টাকাটাও তুলতে পারেননি।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, এবছ‌র এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দেশে ফেরা অনেক কর্মীর অভিযোগ— আকামা তৈরির জন্য তারা কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা দিলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেননি। পুলিশ যখন তাদের গ্রেফতার করছে, কফিল কোনও দায় নিচ্ছেন না। বিষয়গুলো দুঃখজনক। ফেরত আসা সবাই ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয়, সেজন্য বিদেশ যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বি‌শেষ ক‌রে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

 

/এসও/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
ফুটবল লেখকদের ভোটে বর্ষসেরা ফডেন
ফুটবল লেখকদের ভোটে বর্ষসেরা ফডেন
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ