বুড়িগঙ্গা-তুরাগ নদের সংযোগস্থল চরওয়াশপুর মৌজা বা বসিলা ব্রিজের পাশে নদী দখল করে নির্মিত ‘মাইশা পাওয়ার প্ল্যান্ট’-এ অভিযান চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অভিযানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অবৈধ অংশ অপসারণ করা হয়। এর মালিক ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আসলামুল হক।
ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) একেএম আরিফ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান, গত বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে আমাদের এ অভিযান শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা ও দেড়শ’ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে আজ তিনটি একতলা পাকা ভবন, ১০টি পাকা ওয়াল ও ১০টি অন্যান্য স্থাপনাসহ মোট ২৩টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়ছে। এতে নদীর ৩ একর জমি দখল মুক্ত হয়েছে। এছাড়া অবৈধ দখলের দায়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (৪ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে অভিযান ফের শুরু হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে দখল কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
তবে অভিযান চলাকালে সংসদ সদস্য আসলামুল হক দাবি করেন, তিনি অনুমতি নিয়েই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করেছেন। তিনি অভিযানের বিরোধিতা করেন।
তবে বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক আরিফ উদ্দিনের দাবি, ‘সংসদ সদস্যের এ দাবি সঠিক না। ওই জায়গাটি নদীর জায়গা।’
তিনি বলেন, ‘এটি নদীর জায়গা। তা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এমপি সাহেব যে দাবি করেছেন আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং দায়িত্ব নিয়েই বলছি, এটি নদীর জায়গা। এখানে কয়েকটি বিধান অমান্য করা হয়েছে। প্রথমত নদীর জায়গা ভরাট করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত লো ল্যান্ড প্রাকৃতিক জলাধার আইন অনুযায়ী তার শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ নেই। কিন্তু এখানে অনেক উঁচু করে বালু দিয়ে ভরাট করে কাজ করা হয়েছে। তৃতীয়ত পরিবেশ সংরক্ষণ আইনও ভাঙা হয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক আরিফ উদ্দিন আরও বলেন, তারা (মাইশা গ্রুপ) এজন্য একটা আবেদন করেছে। কিন্তু আমরা কোনও অনুমতি দিইনি। আবেদন আর অনুমতি এক জিনিস না। তাদের এই কারখানা বৈধ না। আমরা নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। আদালতের নির্দেশ মতে এ ধরনের উচ্ছেদ আমরা চালিয়ে যাবো।