X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০

‘নিষেধাজ্ঞা শুধু লবিস্টদের কারণে নয়, বব মেনেন্ডেজের উদ্যোগও লক্ষ্যণীয়’

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২৬আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪৯

র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টির সূত্রপাত হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাসে আগে। সিনেটর বব মেনেন্ডেজ এ উদ্যোগটি নেন। তিনি সিনেটকে জানান, বাংলাদেশের র‍্যাবের বিষয়ে মার্কিন সিনেটের কাছে কিছু তথ্য আছে, সে তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। শুধু লবিস্টদের কারণে এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে বলে মনে করি না।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দিনগত রাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান একাত্তর জার্নালে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন এটিএন বাংলার বার্তা প্রধান জ ই মামুন ও বাংলা ট্রিবিউনের বার্তা প্রধান মাসুদ কামাল।

অনুষ্ঠানে শমসের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি নতুন নয়। শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলব না। আন্তর্জাতিক মহলে দীর্ঘদিন ধরে এই লবিস্ট কালচার চালু আছে। শুধু আমেরিকা না, এটা অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের দেশগুলোতেও চালু আছে।

তবে বাংলাদেশে র‍্যাবের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে লবিস্টদের ভূমিকার চেয়ে সিনেটর বব মেনেন্ডেজের উদ্যোগই বেশি লক্ষ্যণীয় বলে মনে করেন সাবেক এই সচিব। তিনি বলেন, বব মেনেন্ডেজের রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশে দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সবসময়ই সোচ্চার তিনি। লবিস্টদের সেই এখতিয়ার নেই যে বব মেনেন্ডেজকে এক্ষেত্রে প্রভাবিত করতে পারবে। তবে বব মেনেন্ডেজের কাছে এসব তথ্য কোথা থেকে এসেছে  সেটা খোঁজে দেখা যেতে পারে। এবং বব মেনেন্ডেজের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করারও প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার (স্যাংকশন) বিষয়টি শুরু হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। যখন সিনেটর বব মেনেন্ডেজ একটি উদ্যোগ নেন, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনের এক মাসে আগে। সিনেটে দেওয়া এক চিঠিতে তিনি বলেন, র্যাবের বিষয়ে মার্কিন সিনেটের কাছে কিছু তথ্য আছে, সে তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে চিঠিটা পাঁচ জন রিপাবলিকান, পাঁচজন ডেমোক্রেট সিনেটর সই করেছিলেন। তখন সেটা হয়ে যায় বাই-পার্টিজান একটি পত্র। নির্বাচনের পরে যখন সিনেটে ডেমোক্রেটরা মেজরিটি পেলো, সেই বব মেনেন্ডেজ-ই সিনেট ফরেন রিলেশন কমিটির চেয়ারম্যান হন। বব মেনেন্ডেজের রাজনৈতিক ইতিহাস যদি কেউ দেখেন, উনি দেশে-বিদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এসব নিয়ে সবসময় চর্চা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে বলে আমি মনে করি। শুধু লবিস্টদের সেই এখতিয়ার নেই যে বব মেনেন্ডেজকে তারা এক্ষেত্রে প্রভাবিত করতে পারবে।
তিনি বলেন, বব মেনেন্ডেজের কাছে এসব তথ্য কোথা থেকে এসেছে  সেটা খোঁজে দেখা যেতে পারে। এবং বব মেনেন্ডেজের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করারও প্রয়োজন রয়েছে। তার কাছে যে তথ্যগুলো রয়েছে এগুলো কতটুকু সঠিক বা সঠিক না—সে বিষয়গুলো আলাপ-আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে। 

নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একটা দীর্ঘ চিঠি দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কেন যুক্তিযুক্ত নয় তা চিঠিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বললেন, এ নিষেধাজ্ঞা রাতারাতি নিষ্পত্তি হবে না, সময় লাগবে, ধৈর্য ধরতে হবে। অর্থাৎ আলাপ-আলোচনা চলছে। 

আমি মনে করি না শুধু লবিস্টদের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট অর্থাৎ ওদের অর্থ মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। তাদের মধ্যে হয়তো কোনো ধরনের খোঁজ-খবর থাকতে পারে।

তিনি আরও বলেন, লবি করাটা নতুন নয়। বিষয়টা হলো, লবি কে করছে, কি কারণে করছে। যদি দেশের স্বার্থে বা বৃহত্তর সমাজের জন্য করে থাকে—সেটা খুবই ভালো জিনিস। ২০০৪ সালে দেশের গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গার্মেন্টস রফতানি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেতে এসটিএনআর নামে একটি মার্কিন লবিস্ট ফার্মকে নিয়োগ দিয়েছিল। বছরে তাদের এক বা দেড় মিলিয়ন ডলার দেওয়া হতো। সে প্রবেশাধিকার আদায়ের জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এবং সিনেটে লবি করেছিল।

/এমএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির ব্যাপারে যা বললেন আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক
মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির ব্যাপারে যা বললেন আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক
গানের শহরে খালিদ খালিদ কান্না...
গানের শহরে খালিদ খালিদ কান্না...
হলমার্ক দুর্নীতি মামলা: কারাদণ্ডের আদেশ শুনে পালিয়ে গেলেন আসামি
হলমার্ক দুর্নীতি মামলা: কারাদণ্ডের আদেশ শুনে পালিয়ে গেলেন আসামি
এনসিসি ব্যাংক ও একপের মধ্যে চুক্তি সই
এনসিসি ব্যাংক ও একপের মধ্যে চুক্তি সই
সর্বাধিক পঠিত
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
দিন দিন নাবিকদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করছে দস্যুরা
দিন দিন নাবিকদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করছে দস্যুরা
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা সাকিবকে আমার বাসায় নিয়ে আসেন: মেজর হাফিজ
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা সাকিবকে আমার বাসায় নিয়ে আসেন: মেজর হাফিজ
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ আর নেই
‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ আর নেই